লুন্ঠিত মালামালসহ আসামি গ্রেফতার

খুলনা

খুলনা থেকে মামুন মোল্লা : খুলনা মেট্রোপলিটন কেএমপি’র খুলনা সদর থান পুলিশ কর্তৃক দস্যুতা মামলার রহস্য উদঘাটন পূর্বক আসামী গ্রেফতার সহ ছিনতাই কার্যে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, লুন্ঠিত টাকা উদ্ধার করেছে বলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি সুত্র জানায়। গতকাল শনিবার ৮ মে, ৩ টা ১০ মিনিটে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দস্যুতা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদেরকে সনাক্ত পূর্বক আসামী ১) বাবলু খলিফা(৩২), পিতা-আব্দুল ছমেদ খলিফা,
সাং-তুষখালিয়া, থানা-মঠবাড়িয়া, জেলা-পিরোজপুর,এপি-সাং-বাগমারা গফ্ফারের মোড়, থানা ও জেলা-খুলনাকে বাগেরহাট জেলার সদর থানাধীন দশআনি এলাকা হতে ধৃত করা হয় এবং ০৮/০৫/২০২১ খ্রিঃ তারিখ ১৭.২০ ঘটিকার সময় আসামী ২) মন্টু সানা(৪০), পিতা-মৃত আব্দুল হাকিম সানা, সাং-হরিনগর, থানা-কয়রা, জেলা-খুলনা, এ/পি-সাং-জাহিদুর রহমান সড়ক, হোল্ডিং নং-১৩, বাগমারা, আফতাব সানার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা ও জেলা-খুলনাকে কেএমপি’র লবনচরা থানাধীন ঠিকারাবন্দ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।


বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীদ্বয় ঘটনার সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। আসামী বাবলু খলিফা(৩২) এর নিকট হতে ছিনতাইকৃত নগদ ৮৯,০০০/-(ঊননব্বই হাজার) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। ০৯/০৫/২০২১ খ্রিঃ তারিখ রাত্র ০০.৩০ ঘটিকার সময় ধৃত আসামীদ্বয়ের দেওয়া তথ্য মতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ এর সহযোগিতায় বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দস্যুতার সাথে জড়িত অপর পলাতক আসামী ৩) মিন্টু আলী(৩৫), পিতা-আইয়ুব আলী, সাং-বাগমারা মেইন রোড, হাজীলেন, থানা ও জেলা-খুলনার নিকট হতে ৩,১০০/-(তিন হাজার একশত) টাকা উদ্ধার পূর্বক তাকে গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের নিকট হতে ছিনতাইকৃত সর্বমোট (৮৯,০০০+৩,১০০)=৯২,১০০/-(বিরানব্বই হাজার একশত) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

পরবর্তীতে ০৯/০৫/২০২১ খ্রিঃ তারিখ ১০.২০ ঘটিকার সময় কেএমপি এর লবনচরা থানাধীন হরিনটানা মেইন রোডস্থ অটো স্ট্যান্ড এর পাকা রাস্তার উপর হতে আসামী ৪) মোঃ ইমরান শেখ (২৪), পিতা- মোঃ নজরুল ইসলাম শেখ, মাতা- রত্না বেগম , সাং- রিয়া বাজার হরিণটানা মেইন রোডস্থ অটো স্ট্যান্ড এর পাশে, থানা- লবনচরা, খুলনা মহানগরীকে ধৃতপূর্বক ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত FZ মটরসাইকেল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। অত্র মামলার ধৃত ২ নং আসামী মন্টু সানা(৪০)কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

দস্যুতায় জড়িত অপর আসামী বাবলু খলিফা(৩২), মিন্টু আলী(৩৫) এবং মোঃ ইমরান শেখ(২৪) দেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দপূর্বক পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ০৩/০৫/২০২১ খ্রিঃ তারিখ সকাল ০৯.৪২ ঘটিকার সময় মোঃ ইকবাল হাসান খান(৫৬), পিতা-মৃত আব্দুল গণি খান, সাং-১০৬, খানজাহান আলী রোড, সুন্দরবন কলেজের বিপরীতে, থানা ও জেলা-খুলনা এর ছোট ভাই তানভীর আহম্মেদ(৩৩) কে সাথে নিয়ে প্রতিদিনের ন্যায় তারা খুলনা থানাধীন ১০৬, খানজাহান আলী রোড, সুন্দরবন কলেজের বিপরীত হতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন গল্লামারী ১২৪ এমএ বারী সড়কস্থ ‘‘মেসার্স তারা মটরস্’’ নামক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়িক নগদ ৩,৮০,০০০/-(তিন লক্ষ আশি হাজার) টাকা একটি ল্যাপটপের ব্যাগে নিয়ে মটরসাইকেল যোগে রওনা হয়।

পথিমধ্যে খুলনা থানাধীন ১৬, হাজী মেহের আলী রোড, ইকবালনগর, খুলনা, গ্রীণ লীফ স্কুলের সামনে পৌঁছালে অন্য একটি লাল কালারের FZ মটরসাইকেল, যাতে তিন জন অজ্ঞাত যুবক সবাই মাস্ক এবং ক্যাপ পরা অবস্থায় তাদের গাড়ীর গতিরোধ করে এবং জোর পূর্বক বাদীর ছোট ভাইয়ের কাছে থাকা ব্যাগ ভয়ভীতি ও মারধর করে ছিনিয়ে নেয়।

অত্র মামলার বাদী মোঃ ইকবাল হাসান খান(৫৬), এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুলনা থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০৩/০৫/২০২১, ধারা-৩৯২ পেনাল কোড রুজু করা হয় এবং মামলার তদন্তভার এসআই(নিঃ)/ মোঃ সাইদুর রহমান এর উপর অর্পন করা হয়। অতঃপর কেএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দিক নিদের্শনা প্রদান করেন।

মামলার বাদী মোঃ ইকবাল হাসান খান(৫৬), এর ১০৬ খানজাহান আলী রোড, সুন্দরবন কলেজের বিপরীতে অবস্থিত বাসা হতে ঘটনাস্থল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ পূর্বক মটরসাইকেলটির ছবি যাচাই করার জন্য খুলনা মহানগীর সকল মটরসাইকেল গ্যারেজে দেখানো হয়।

মামলাটির নিরবিচ্ছিন্ন তদন্ত কার্যক্রম ও বিশ্বস্ত সোর্স এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কয়েকজন সন্ধিগ্ধ ব্যক্তির নাম উঠে আসে। অন্তঃপর সকল তথ্য-উপাত্ত যাচাই সাপেক্ষ্যে উপরোক্ত ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
অত্র মামলার লুন্ঠিত অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযান এবং মামলার সার্বিক তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।