নিজস্ব প্রতিবেদক : বয়সসীমা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক কমিটির দাবি পূরণের আশ্বাসে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতারা কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করলেও ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্য অঙ্গ-সংগঠনের নেতারাও গতকাল রোববার সকাল থেকে কার্যালয়ের ভেতর অবস্থান করছেন। ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতারা কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে সংঘর্ষ-সংঘাত দেখা দিতে পারে। তবে অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের পর থেকে হাইকমান্ডের নির্দেশে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছেন।
বয়সের সীমা না রাখা, স্বল্পমেয়াদি কমিটি গঠনসহ তিন দফা প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেন সংগঠনের বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতারা। পরে ওইদিন রাতে দাবি পূরণে সাবেক ছাত্রনেতাদের (ছাত্রদলের কমিটি গঠনে বিএনপি গঠিত সার্চ কমিটির সদস্যরা) আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনতরা। পরবর্তীতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে সার্চ কমিটির সদস্যরা ছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারীরা। দাবি পূরণে তারাও পুনরায় আশ্বাস দেন আন্দোলনকারীদের। কিন্তু দাবি পূরণে কার্যত এখনও কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র সহ- সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট বলেন, প্রথমে সার্চ কমিটি ও পরে সিনিয়র নেতাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এবং তাদের সম্মানার্থে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করি। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শান্তিপূর্ণভাবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার। আমাদের দাবি নতুন কমিটি দিতে হবে। বয়সের সীমারেখা তুলে নিতে হবে। ২০০০ সালের আগে যাদের এসএসসি তাদের নিয়ে একটি স্বল্পকালীন কমিটি দিতে হবে। আমরা দাবি আদায়ে শতভাগ আশাবাদী। তবে আদায় না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।
জানা গেছে, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য বিএনপির বিভিন্ন উপ-কমিটি ও দুই অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে ছাত্রদলের সদ্য সাবেক নেতাদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। পাশাপাশি ছাত্রদলের কাউন্সিলের যাবতীয় প্রস্তুতিও নিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আর কাউন্সিলে প্রার্থী হতে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী যেকোনো বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং অবশ্যই বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হওয়াসহ তিনটি শর্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়।