চুরি করে মশার কীটনাশক বিক্রির দায়ে ৪ মশককর্মী কর্মচ্যুত

অপরাধ রাজধানী

ক্রয়কারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের  


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিনিধি : মশক নিয়ন্ত্রণ কাজে ব্যবহৃত এডাল্টিসাইড সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কার্যালয়ে পৌঁছে না দিয়ে তা চুরি করে দোকানে বিক্রি করার দায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) দৈনিক মজুরীভিত্তিক নিয়োজিত চার মশক কর্মীকে কর্মচ্যুত করা হয়েছে। চুরি করা সেসব কীটনাশক ক্রয় করা দোকান মালিকের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

কর্মচ্যুত চারজন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর ৫০ নং ওয়ার্ডের দৈনিক মজুরিভিত্তিক মশক কর্মী উজ্জল সিদ্দিকী, সুজন মিয়া মোঃ হাফিজুল ইসলাম ও জুয়েল মিয়া।

করপেরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক দপ্তর আদেশে আজ তাদেরকে কর্মচ্যুত করা হয়। দপ্তর আদেশে ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনা পরিক্রমায় জানা যায় যে, দক্ষিণ সিটির এ মাসের ৯ তারিখে অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় হতে সাপ্তাহিক মশক নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য ৭, ৪৫, ৪৬, ৫০, ৫২ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের মশক সুপারভাইজার/তার প্রতিনিধির নিকট ৬ ড্রাম কীটনাশক সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি ড্রামের ধারণক্ষমতা ২০০ লিটার। নিয়মানুযায়ী সেসব কীটনাশক কাউন্সিলর দপ্তরে পৌঁছানোর কথা।

কিন্তু এডাল্টিসাইড সরবরাহের পর কাউন্সিলর কার্যালয়ে পৌঁছে না দিয়ে ৪৬, দক্ষিণ সায়েদাবাদের “মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সী” নামীয় খুচরা জ্বালানী তেল বিক্রেতার দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে করপোরেশনের মশক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক মিজানুর রহমান মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সীতে উপস্থিত হয়।

এ সময় তারা সেখানে ২০০ লিটারের দুটি ড্রাম ভ্যান গাড়ি হতে নামানো অবস্থায় দেখতে পায়। ইতোমধ্যে আরেকটি ভ্যান গাড়ি যোগে ৩০ লিটার ধারণক্ষমতার তিন গ্যালন এডাল্টিসাইড মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সির ১৩/৬/২, উত্তর-পশ্চিম যাত্রাবাড়ীর শোরুমের সামনে পৌঁছানোর খবর পেলে সেখানে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। উপস্থিত দুজন ভ্যান গাড়ি চালককে কোথা থেকে এসব কীটনাশক আনা হয়েছে তা জানতে চাইলে ভ্যনচালক ৫০ নং ওয়ার্ডের কথা বলেন। পরে ৫০ নং ওয়ার্ডে যোগাযোগ করে জানা যায় যে, সরবরাহকৃত কীটনাশক সেখানে পৌঁছায়নি। এর অব্যাবহিত ব্যবহৃত পরেই ৫৪ নং ওয়ার্ডেও সরবরাহকৃত এডাল্টিসাইড পৌঁছানো হয়নি বলে জানা যায়।

বিষয়টি তৎক্ষণাৎ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নিবার্হী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ৪৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু, অঞ্চলের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সায়েদাবাদ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গ ও অন্যান্য অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে সেই দোকানের গোডাউন হতে ২০০ লিটারের দুটি ড্রাম, ৩০ লিটারের ৮টি ও ২০ লিটারের ১টি গ্যালনসহ সর্বমোট ৬৬০ লিটার কীটনাশক জব্দ করেন।

পরবর্তীতে অঞ্চল-৫ (অ. দা.) এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত দোকান ও দোকানের গোডাউন সিলগালা করেন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে করপোরেশনের মশক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চুরি করা অবৈধ কীটনাশক ক্রয় করা দোকান মালিক আব্দুল মজিদ সিকদারের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানা একটি মামলা দায়ের করেন।

পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ও ৪০৯ নং ধারায় ৯ জুন ২০২১ খ্রি. তারিখে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত মামলাটির নং-৩৫।