নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় জাল স্ট্যাম্প তৈরির ছাপাখানা থেকে ২০ কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্পসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আবু ইউসুফ ওরফে পারভেজ ওরফে রানা, আতিয়ার রহমান সবুজ, নাসির উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম ওরফে সোহেল। বৃহস্পতিবার ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার চক্রের মূলহোতা আবু ইউসুফ। এই চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার ব্যবহার করে জাল স্ট্যাম্প তৈরি করে বিক্রি করতো। এরপর ২০১৯ সাল থেকে গোপন ছাপাখানা বসিয়ে বৃহৎ পরিসরে জাল স্ট্যাম্প তৈরি শুরু করে। তিন ধাপে এসব জাল স্ট্যাম্প ক্রেতা পর্যায়ে পৌঁছে দিতেন তারা। তাদের কারখানা থেকে বরিশাল, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার নামে খাম উদ্ধার করা হয়েছে। তারা এসব জাল স্ট্যাম্প দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতো।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমনকি আদালতেও এসব জাল স্ট্যাম্প সরবরাহ করা হতো। তবে প্রতিষ্ঠানের মূল কর্তা-ব্যক্তিরা হয়তো বিষয়টা জানেও না, যারা এগুলো কেনার দায়িত্বে থাকে পিয়ন বা ক্লার্ক তারাই কম দামে এগুলো কিনে থাকে। এটাও এক ধরনের অপরাধ।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের সময় ছাপাখানা থেকে ২০ কোটি ২ লাখ ২৪ হাজার টাকার মূল্যের ১৩ লাখ ৪০ হাজার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের ১৯ হাজার ৪৮০টি জাল কোর্ট ফি এবং জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ১ কোটি ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার ১৮টি চেকের পাতা, ১১৪ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার, ডাক বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিল ও বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। ওই ছাপাখানা থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ জব্দ করা হয়, যা দিয়ে অন্তত আরো শত কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প বানানো সম্ভব ছিল।
তিনি আরো বলেন, আমরা ধারণা করছি চক্রে আরো অনেকে জড়িত আছে। এটা অনেক বড় একটি চক্র। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত আরো তথ্য জানা যাবে।