নিজস্ব প্রতিনিধি : ইউনানী-আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিকে আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ বিবেচনা করা হয়। কেননা, ভারতবর্ষে অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির আগমনের বহু পূর্বেই ইউনানী-আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিদ্বয় চিরায়ত ও প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি রূপে
সমাদৃত হয়েছে।
পাক ভারত উপমহাদেশে এ চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো নিরাপদ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হতো।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ঐতিহ্যবাহি চিরায়ত এই চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো আইনী শৃংখলে আবদ্ধ হলো।
১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে আইন করে ইউনানী এবং আয়ূর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ করে দেয়ার কারনে গুরু-শিষ্য শিক্ষা বিনিময় রেওয়াজ চালুছিল।
১৩০ বছর পর ইউনানী-আয়ূর্বেদ চিকিৎসার জন্য একটি আইন প্রনয়ন করা হয়েছিল ১৯৬৫ সনে। উহা বলবৎ ছিল ১৮ বছর।
ঐতিহাসিকভাবে আয়ুর্বেদ পৃথিবীর আদিমতম নিয়মতান্ত্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ভারতবর্ষের নিজস্ব চিকিৎসা বিজ্ঞানও বটে।
পক্ষান্তরে ইউনানী চিকিৎসা বলতে প্রাচীন গ্রীক চিকিৎসা ব্যবস্থাকেই বোঝায়।
মুসলিম শাসনামলে ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতির আগমন ঘটে ভারতবর্ষে।
এখানকার আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের সংগে সাদৃশ্য খুঁজে পায় গ্রীকো- এরাবিক/ পারসো-এরাবিক তথা ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতি। এরপর থেকেই ইউনানী-আয়ুর্বেদ উভয় পদ্ধতি উপমহাদেশের মানুষের নিকট সমভাবে সমাদৃত হতে থাকে।
১৯৪৭ সনে ব্রিটিস শাসনামলের অবসানের পর ১৯৬৫ সনে ইউনানী-আয়ূর্বেদ একটি আইন করা হয়েছিল। উহা পূর্নাংগ রূপ লাভ করার আগেই ১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা উত্তর ১৯৭২ সনে তদানিন্তন বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে ৫ জুলাই সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইউনানী-আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে বাংলাদেশ ইউনানী আয়ুর্বেদ বোর্ড ঘোষণা করা হয়।
এই ঐতিহাসিক ঘোষনার মধ্যদিয়ে চিরায়ত চিকিৎসা পদ্ধতি দু’টিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মূল শ্রোতধারায় যুক্ত করার লক্ষে বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ূর্বেদিক বোর্ড গঠন করে ইউনানী- আয়ূর্বেদ চিকিৎসার দার উন্মুক্ত করা।
তাই,
প্রাচি (স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন)
“৫ জুলাই “কে জাতীয় ইউনানী ও আয়ুর্বেদ দিবস ঘোষণা দেয়া যৌক্তিক মনে করে।
সঙ্গত কারনেই ৫ জুলাই হউক আমাদের জাতীয় ইউনানী-আয়ুুর্বেদিক দিবস।