বিশেষ প্রতিবেদক : যে কোনো সময় বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যানকে দুর্নীতি দমন কমিশন জিজ্ঞসাবাদ করতে পারে। তাতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির একজন আইনজীবী।
এই কোম্পানিটির অর্থপাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
সম্প্রতি কোম্পানিটির এমডি ও চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সংস্থাটি। রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, গত বছরের নভেম্বর থেকে ইভ্যালির অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
এই অনুসন্ধান চলাকালীন গত ৮ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দুদকে একটি চিঠি আসে।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাত পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনও আসে। এগুলো অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
এ অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হতেও পারে।
খুরশীদ আলম খান বলেন, অনুসন্ধান চলাকালীন যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আইনগত কোনো বাধা নেই আইনে।
দুদককে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইনে। অনুসন্ধানকারী দল ইচ্ছা করলে অনুসন্ধানের স্বার্থে যে কোনো সময় ইভ্যালির যে কোনো কর্মকর্তা চেয়ারম্যান হোক আর এমডি হোক জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
এর আগে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
৪ জুলাই পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ইভ্যালি গ্রাহক ও মার্চেন্টের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছে, তার মধ্যে ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে টাকা আত্মসাৎ কিংবা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।
ইভ্যালি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেগুলোই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।
তিনি আরও জানান, ইভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রতিযোগিতা কমিশন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ইভ্যালির বিতর্কিত ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া নিয়ে সম্প্রতি তদন্তে নামে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরপর এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা।
প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার।
স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।