চিত্রনায়িকা পরীমনির মুক্তির দাবিতে সমাবেশে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী যা বললেন
আজকের দেশ রিপোর্ট : দেশজুড়ে আলোচিত ও সমালোচিত অভিনেত্রী পরীমনির মুক্তির দাবি করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক ও কলাম লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী।
শনিবার ১৪ আগস্ট বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ স্লোগান নিয়ে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’-এর ব্যানারে এই সমাবেশে রাজনৈতিক কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে লন্ডন থেকে যুক্ত হন আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী।
মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এ সমাবেশের সঙ্গে আন্তরিক সমর্থন জ্ঞাপন করছি। পরীমনিকে যেভাবে হ্যারেজ করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি।’
গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে মাদকদ্রব্যসহ আটক করে র্যাব। পরের দিন তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়। এই মামলায় দুই দফায় ছয়দিনের রিমান্ড শেষে এই অভিনেত্রীকে শুক্রবার কারাগারে পাঠায় আদালত।
পরীমনির মুক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে গত ১০ আগস্ট সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা গাফ্ফার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শাসনামলেই নারীদের ক্ষমতায়ন শুরু হয়েছে। সেই জন্যই তার কাছে আমার সবিনয় আবেদন, পরীমনির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করুন। তাকে বিচার থেকে রক্ষা করতে বলি না। তাকে হায়নার গোষ্ঠীর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
পরীমনি ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান ১৭ বিশিষ্ট নাগরিক। সেখানেও ছিলেন ৮৬ বছর বয়সী গাফ্ফার চৌধুরী।
জাস্টিস ফর পরীমনি শিরোনামে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক রাশিদ পলাশ। পরীমনিকে নিয়ে তিনি নির্মাণ করছেন প্রীতিলতা নামের সিনেমা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমাটি নিয়ে দেখা দিয়েছে বড় অনিশ্চয়তা।
রাশিদ পলাশ বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বলছি না। আমরা বলতে চাই পরীমনি আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক। পরীমনি একজন শিল্পী, তাকে নিয়ে এ হেনস্তা মেনে নেয়া যায় না।’
শেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাবেশের সমন্বয়ক ও শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমগুলো পরীমনির এমন সব খবর প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে শুধু পরীমনিকেই নয়, পুরো নারী সমাজকেই অপমান করা হচ্ছে। আমাদের মা বোনদের যেভাবে পুলিশ উপস্থাপন করেছে, খবরগুলো সেভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে।
‘গণজাগরণ মঞ্চের সময় বাঁশের কেল্লা যেভাবে নারীদের হেয় করেছে, পরীমনিকের কেন্দ্র করে প্রগতিশীল গণমাধ্যম একই ধরনের কাজ করেছে। আমরা শুধু পরীমনির জন্য এখানে দাঁড়াইনি, আমরা দাঁড়িয়েছি সমস্ত নারীদের জন্য।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের কো-ফাউন্ডার মুশফিকা লাইজু, মানবাধিকার কর্মী বেগম জোনাকি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুজ্জামান শরিফ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী শ্বাশতী বিপ্লব, জাসদ-এর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী সালমা সুলতানা, যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খান আসুদুজ্জামান মাসুম।
সমাবেশে সংহতি জানান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র লীগের সদস্য ও রূপসজ্জাকার হাফিজউদ্দিন মাহবুব, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনউদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়নের সহ সভাপতি আণিক রায়।