নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে র্যাব
এম এ স্বপন : চট্টগ্রাম নগরীতে কথা কাটাকাটির জের ধরে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ওই তরুণ নগরীর পাহাড়তলী এলাকার একটি ‘কিশোর অপরাধী গ্যাংয়ের’ সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলীতে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। নিহত মোবারক হোসেন (২০) দক্ষিণ কাট্টলী মুরগী ফার্ম এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মো. রুবেল (১৮) ও মো. হৃদয় (১৭) নামে দুজনকে।
পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুর রহমান জানান, ভিকটিম ও হত্যাকারীরা সবাই একই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে।
ওসি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিডিএ গরুর বাজারের বিপরীতে বসে গল্প করছিল মোবারক, রুবেল, হৃদয়সহ আরও কয়েকজন কিশোর। এসময় তাদের করা আগের একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মোবারক রুবেলকে থাপ্পড় দেয়।
পরে রুবেল একই গ্যাংয়ের আরও কয়েকজনকে এনে মোবারককে মারধর করে। একপর্যায়ে বাঁশ দিয়ে রুবেলকে আঘাত করলে তার চোয়াল ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান ওসি।
রাতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর রাতে কাট্টলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেল ও হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
এদিকে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে শক্ত পদক্ষেপ নিয়ে মাঠে নামছে র্যাব। এ জন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় থাকা কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িতদের ওপর বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।
বিশেষ করে যেসব কিশোর গ্যাং ইতিমধ্যে নানা ধরনের অপরাধ কর্মকা-ে সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে দ্রুত আইনে আওতায় আনা হবে।
বুধবার র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার নবনিযুক্ত পরিচালক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বরগুনার কিশোর গ্যাং লিডার নয়ন ব- থেকে শুরু করে টঙ্গিতে নবম শ্রেণীর ছাত্র শুভ হত্যার মতো ঘটনা আর একটিও ঘটতে দেয়া যায় না।
র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ইতিমধ্যে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে র্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছেন। র্যাবের ওয়েবসাইট ও রিপোর্ট-টু র্যাব নামক অ্যাপসের মাধ্যমেও কিশোর গ্যাং সংক্রান্ত তথ্য র্যাবকে জানানো যাবে।
কিশোর গ্যাং যখন মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তখনই সেখানে অস্ত্র চলে আসে। এর সঙ্গে হত্যা এবং ধর্ষণের মতো বিবেকহীন কাজও ঘটে। জঘন্য অপরাধ কর্মকা-ের সবকিছুই জড়িয়ে যায়। এজন্য অভিভাবকদের সক্রিয় এবং সচেতন হয়ে সন্তানদের খোঁজ খবর রাখার আহ্বান জানিয়েছে র্যাব।
এখন পর্যন্ত কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় ৩৫ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে দেশের আইন অনুযায়ী সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়ে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘আমাদের নজরদারিতে আরও অনেকেই আছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আপনারা গ্যাং কালচারের বিরুদ্ধে র্যাবের দৃশ্যমান অভিযান দেখতে পাবেন।