বিশেষ প্রতিবেদক : পাইলট প্রকল্প হিসেবে কাজ চলছে দু’বছর। উৎপাদনও হচ্ছে পাটের সেলুলোজ থেকে সোনালী ব্যাগ। অথচ এখনো বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না পরিবেশবান্ধব ‘সোনালী ব্যাগ প্রকল্প’। কারণ হিসেবে অর্থ সংকটের কথা জানান প্রকল্প পরিচালক। সম্ভাবনাময় এ উদ্যোগে সরকারকে অর্থ যোগান দেয়ার পাশাপাশি বাজারে পলিথিন উৎপাদন বন্ধে জোর পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
বিশ্বব্যাপী পলিথিনের বিকল্প উপাদানে তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম আবিষ্কার করেছে পাটের সেলুলোজ দিয়ে তৈরি পচনশীল সোনালী ব্যাগ। পাইলট প্রকল্প শুরু ২০১৭ সালের শেষের দিকে। কিন্তু নানা জটিলতায় এখনো বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আলোর মুখ দেখেনি বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন, বিজেএমসির আওতাধীন ‘সোনালী ব্যাগ প্রকল্পটি’। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রকল্প পরিচালক বলছেন, অর্থ সংকটের কথা।
বিজেএমসির উদ্ভাবক বিজ্ঞানী ও উপদেষ্টা ড. মোবারক হোসেন বলেন, সরকার ও আমাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাগ উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। কিন্তু অর্থের কিছুটা সংকট রয়েছে।
সম্প্রতি প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, চলমান মেশিনে শুরুর দিকে যেখানে তিন হাজার পিচ ব্যাগ উৎপাদন হতো, সেখানে এখন উৎপাদন হচ্ছে এক হাজার পিচ। কখনো বন্ধও থাকছে উৎপাদন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে এ প্রকল্প। একইসঙ্গে দাম নিয়ে আসতে হবে সহনীয় পর্যায়ে।
অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, পরিবেশবান্ধব এ ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারে প্রচলন করতে হলে শক্ত হাতে পলিথিন বন্ধ করতে হবে।
তবে আশার কথাই বলছেন বিজেএমসি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ নালিম। তিনি বলেন, অভিজাত মার্কেট ও বিশ্ব বাজারের জন্য বর্তমান মূল্য সহজসাধ্য।
২০ গ্রাম ওজনের ১৬/১২ ইঞ্চি আকারের প্রতিটি ব্যাগ উৎপাদনে বর্তমানে প্রকৃত ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৪ টাকা। উৎপাদন কমে যাওয়ায় আরো বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
বিশ্বে পলিথিন ব্যবহারের কারণে প্রতিনিয়ত পরিবেশ যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে তার বিপরীতে বাংলাদেশের আবিষ্কার পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ আবিষ্কার। যার দেশে শুধু নয়, বিশ্বেও রয়েছে বিশেষ চাহিদা। এজন্য ব্যবসায়িকভাবে একে সফল করতে গেলে বাজার পর্যালোচনা করে দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।