নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ঈদুল আযহায় ‘অতিরিক্ত ভাড়া’ না নিয়ে বাস মালিকদের ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে আসন্ন ঈদে সড়কপথে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় সভা শেষে তিনি একথা বলেন।
বাস টার্মিনালগুলোর ব্যবস্থাপনা সেবাবান্ধব করার নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতি টার্মিনালে বিআরটিএ মোবাইল কোট ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভিজিল্যান্স টিম কার্যকর থাকবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী বাস সার্ভিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাস মালিকদের ‘অতিরিক্ত ভাড়া’ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোরবানির ঈদ, এটা সেক্রিফাইসের ঈদ, কাজেই আমি মালিকদের ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদের আগে-পরে সাত দিন সড়কে কাভার্ডভ্যান চলবে না। তবে পশুবাহী, ত্রাণবাহী, পচনশীল পণ্যবাহী ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের ট্রাক চলাচল করবে। এছাড়া, জরুরি প্রয়োজনে রেকার ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা আছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক-মহাসড়কগুলোতে পশুবাহী ট্রাক ও যানবাহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। কেউ যেন পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি করতে না পারে এবং নির্দিষ্ট বাজারে যেতে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য জেলা ও হাইওয়ে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোর গতি কম। মহাসড়কের যেকোনও জায়গায় থেমে যায়। যার কারণে অন্যান্য গাড়ি চলাচলের গতি কমে যায়। এ কারণে মহাসড়কে কোনও ফিটনেসবিহীন গাড়িতে যাত্রীরা যেন চলাচল না করেন এবং ওই সব গাড়িতে যেন পশু না ওঠানো হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, যানজট এড়াতে ৮, ৯ এবং ১০ আগস্ট এই তিন ধাপে গার্মেন্টসকর্মীদের ছুটি দিতে বিজিএমইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মেরামত কাজ ঈদের অন্তত তিন দিন আগে যে কোনো মূল্যে শেষ করতে হবে। দিনরাত আমাদের লোকজনকে প্রস্তুত রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত কাজ করে মেরামত করা যায়, সে রকম নিশ্চয়তা দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জনগণ এমনিতেই একটা আতঙ্ক (ডেঙ্গুজ্বর) নিয়ে দেশের বাড়িতে যাচ্ছেন, সেখানে রাস্তার অবস্থাটা যদি পাসেবল না হয়, তাহলে দুর্ভোগ হবে। খোঁড়াখুঁড়ি সব বন্ধ, সবাইকে বলেছি। টঙ্গী-গাজীপুর সড়কে বিআরটিএর কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে উপস্থিত সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌলীকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এছাড়া এলজিইডির সড়কের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, মফস্বলের বেশিরভাগ সড়ক এলজিইডির।
এবারে ঈদে বিআরটিসির স্পেশাল সার্ভিসে সাড়ে ১১শ বাস থাকছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় সংগৃহীত আড়াইশ বাসও ঈদ বহরে যুক্ত হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে আরও ৫০টি বাস স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।
কাদের বলেন, বিজিএমইএর অনুরোধে পোশাক শ্রকিদের জন্য ১৫১টি বাসের চট্টগ্রামে ২০টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিজিএমইএ তিন দিন পর্যায়ক্রমে ছুটি দেবে। এতে রাস্তায় চাপ কম পড়বে। গাজীপুর সিটি মেয়র ঈদসার্ভিস উপলক্ষে ৫শ ভলান্টিয়ার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সভায় পরিবহন শ্রমিক নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।