বাড়া কমার মধ্যে ডেঙ্গু

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন জীবনী ঢাকা সারাদেশ স্বাস্থ্য

ভাইরাস থাকে দু-সপ্তাহ

বিশেষ প্রতিবেদক : রাজধানীসহ সারাদেশে আবারও বাড়ল ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১৭০৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর ৪১টি হাসপাতালে ৭৩৪ জন ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে ৯৭২ জন ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৮। তাদের মধ্যে রাজধানীতে ৩ হাজার ৬৬৮ ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে ৩ হাজার ৫০০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ১ জানুয়ারি থেকে রোববার পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ১৮২। তাদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৫ হাজার ৯৭৪ জন।
ডেঙ্গু ভাইরাস থাকে দু-সপ্তাহ : সুস্থ হওয়ার পরেও একজন রোগী ১০-১৫ দিন ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে। তাই এই সময়টা আবারো এডিসের কামড় হতে পারে আরো ভয়ঙ্কর। বিপদ ডেকে আনতে পারে আশপাশের মানুষের। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া রোগীদের বেশী সতর্ক থাকতে বলছেন, সফররত সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ডা. মো. তৌফিক ইসলাম।
এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতির ভয়াবহতার জন্য অসচেতনতাকেই দায়ী করলেন তিনি।
চলতি বছর দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছাপিয়েছে সব রেকর্ড। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ৫১ হাজার ৪৭৬। মৃতের সংখ্যা ৪০।
এমন বাস্তবতায় ঢাকায় সফররত সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ডা. মো. তৌফিক ইসলাম সময় সংবাদের মুখামুখি হয়ে জানান, কিভাবে ডেঙ্গুতে সাফল্য পেয়েছে দেশটি। বলেন ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা আর কমিউনিটি লেভেলের কার্যক্রমেই মুল চাবিকাঠি।
ডা. মো. তৌফিক ইসলাম বলেন, ওখানে প্রতিটি নাগরিকের ঘরে ঘরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে লিফলেট দেয়া হয়। এছাড়া সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে যে বাসায় যেনো মশার লার্ভা জন্ম না নেয়। সেখানে সপ্তাহে এবং মাসে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ভিজিট করে, তারা যদি লার্ভা পায় তাহলে জরিমানা হয়।
ন্যাশনাল গাইড লাইনের প্রশংসা করলেও, তিনি বলেন ডেঙ্গু মোকাবিলায় দক্ষতা দেখিয়েছেন এদেশের চিকিৎসকরা। তবে হাসপাতাল থেকে ফিরেও ১০-১৫ দিন ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে একজন রোগী তাই ঐ সময়টাতেও থাকতে হবে সাবধানতায়। এক্ষেত্রে এ বিষয়ে কাউন্সিলিং এর পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
ডা. মো. তৌফিক ইসলাম বলেন, যে রোগী হাসপাতাল থেকে চলে যাচ্ছে তার মধ্যে ভাইরাস থাকে ১০ থেকে ১২ দিন। তাকে কিন্তু কোনো পরামর্শ দেয়া হয় না। এই সময় যদি তাকে ডেঙ্গু মশা আবার কামড় দেয় তাহলে অবস্থা খুবই মারাত্মক হবে।
এসব পরামর্শ আমলে নিয়ে নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, মানুষকে তার নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে হবে। হাসপাতাল থেকে মুক্ত হওয়ার পরেও ভুললে চলবে না যে আমার কারণে অপরজন আক্রান্ত হতে পারে। কাজেই এই ধরনের পরমার্শ আরও দেয়ার ব্যবস্থা আমরা করবো। ডেঙ্গু পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাবাদী তিনি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *