নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সারাদিনের কাজ শেষে রাত ১০ টায় বেতুয়া ঘাটে ঘুরতে গেছেন তারা। উদ্দেশ্য ছিল মেঘনার পারে বসে সেইদিনের রাতের খাবার সারবেন চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র ডাঃ সুরাইয়া আর তার বাকি চিকিৎসক সঙ্গীরা।রাত ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে, একটা স্পীডবোট ঘাটে ভিড়ে এবং একজন গর্ভবতী মা সহ তার পরিবারের তিনজন বোট থেকে নামেন। আর ঠিক তখনই বাধল বিপত্তি।
মা মাটিতে বসে পড়লেন এবং প্রসব বেদনায় ছটফট করতে শুরু করলেন। ঘাটে বেড়াতে যাওয়া চিকিৎসকরা আর্তনাদ শুনে দ্রুত চলে গেলেন ঘটনাস্থলে।
চিকিৎসকদের মধ্যে একজন ছিলেন ডাঃ সুরাইয়া। কোন আগ পিছ না ভেবেই তিনি এবং সঙ্গীরা মিলে নেমে পরেন তাদের দায়িত্বে।
ডাঃ ফাইয়াজের ভাষ্যমতে, “ডাঃ সুরাইয়া অনেকটা ফেরেশতার মতই বাবুর মা এবং বাবুর জন্যে আবির্ভূত হন এবং মা কে আস্বস্ত করে সেখানেই নরমাল ডেলিভারির জন্যে মানসিকভাবে প্রস্তুত করেন।”
বাকি চিকিৎসকগণ অল্প সময়ের মধ্যে , দূরের একটি ফার্মেসি থেকে ব্লেড এবং কর্ড ক্ল্যাম্প আনতে আনতেই ডাঃ সুরাইয়া কোনো ঝামেলা ছাড়াই নদীর পাড়েই শিশুটির ডেলিভারী সম্পন্ন করেন। পুরোটা ডেলিভারি তিনি সম্পন্ন করেন একদম খালি হাতে।
ডাঃ সুরাইয়া এবং সঙ্গীদের প্রচেষ্টায় সেদিন রাতে পৃথিবীতে আলো দেখল একটি নতুন জীবন। মা এবং শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
ডাঃ ফাইয়াজ তার ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে বলেন ” নিত্যদিনের এমনই হাজারো ঘটনার সাক্ষী এবং সঙ্গী আমরা।
ড. সুরাইয়ার মত সাহসী ডক্টররা মাঠ পর্যায়ে সামান্য রিসোর্স দিয়েই সেবা দিচ্ছেন এবং অসংখ্য জীবন বাঁচানোর মাধ্যম হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তার । কিন্তু কেউ কি জানত স্রষ্টা আসলে কি উদ্দেশ্যে সেখানে তাদের পাঠিয়ে ছিলেন?”
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র ডাঃ সুরাইয়া, ডাঃ ফাইয়াজ এবং ডাঃ নাহিদ এমন একটি মহান দায়িত্ব পালনের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।