সুমন হোসেন ( যশোর) ঃ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর যশোর ব্যাটালিয়ন এবং জেলা প্রশাসন যশোরের যৌথ অভিযানে ১৪ কোটি টাকা মূল্যের ১৫.৮০০ কেজি ওজনের ১৩৫ টি স্বর্ণের বার ও ০৩টি প্রাইভেটকারসহ ০৬ জন স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং বিজিবি’র যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকীর নির্দেশনায় অদ্য ১ জুন ২০২২ তারিখ আনুমানিক ১ টার সময় অত্র ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অপস্ অফিসার এডি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন এবং জেলা প্রশাসন, যশোরের একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেটসহ যশোর জেলার সদর থানাধীন বাহাদুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় বিজিবি একটি চৌকস আভিযানিক টহলদল ফাঁদ পেতে থাকে।
পরবর্তীতে আনুমানিক ৩ টার সময় যশোর, বাহাদুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে সন্দেহভাজন ৩টি প্রাইভেটকার থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। আটককৃত ৩টি প্রাইভেটকার হতে ৬ জন স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সদস্যসহ (প্রতিটি প্রাইভেটকারের চালক ও ২য় আসনধারীসহ ০২জন করে) আনুমানিক ১৩,৫৮,৮০,০০০ (তের কোটি আটান্ন লক্ষ আশি হাজার) টাকা মূল্যমানের ১৫.৮০০ কেজি ওজনের ১৩৫ টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, যানবাহন তল্লাশিকালে দেখা যায় উক্ত স্বর্ণের বারগুলি প্রাইভেট কারের সম্মুখভাগে অভিনব কায়দায় প্রস্তুতকৃত বিশেষ বক্সে বহন করা হচ্ছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ব্যক্তিরা জানায় যে, তারা ঢাকা হতে স্বর্ণের বার সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে যশোর সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যাচ্ছিল এবং উক্ত স্বর্ণের বিনিময়ে ইউএস ডলার নিয়ে ঢাকায় ফেরত যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী, ভারপ্রাপ্ত অপস্ অফিসার এডি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, অপারেশনে অংশগ্রহণকৃত বিজিবি সদস্যগণ এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবু নাছির এর উপস্থিতিতে আটকতৃক স্বর্ণ, যানবাহন এবং আসামীদের জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
আটকৃত প্রাইভেটকার এবং স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে, উল্লেখ করা হলো, ঢাকা মেট্টো-গ-২৬-৩৩৮৭ এলিয়ন (টয়োটা এলিয়ন), গাড়ির রং-মেরুন, জাহিদুল ইসলাম, পিতা-আব্দুল জব্বার, গ্রাম-দূর্গাপুর, ডাক-বেনাপোল, থানা-বেনাপোল পোর্ট ও জেলা-যশোর (গাড়ির চালক) নাজমুল হোসেন (২৫), পিতা-আতিয়ার রহমান, গ্রাম-পুটখালী, ডাক-বালুন্ডা, থানা-বেনাপোল পোর্ট ও জেলা-যশোর, (২য় আসনধারী)
ঢাকা মেট্রো-গ-২৬-৩৫৭৫, মডেল নাম- টয়োটা এলিয়ন, গাড়ির রং-সাদা, মোঃ আরিফ মিয়াজী (৩৬), পিতা-রশিদ মিয়াজী, গ্রাম-ঘাগুরিয়া, ডাক-বাগানবাড়ী, থানা-মতলব উত্তর ও জেলা-চাঁদপুর,(গাড়ির চালক), শাহ জালাল (৩২), পিতা-সিরাজুল বেপারী, গ্রাম ও ডাক-নৈয়ার, থানা-দাউদকান্দি ও জেলা-কুমিল্লা, (২য় আসনধারী)
ঢাকা মেট্রো-ম-০০-৭০২৫, মডেল নাম- টয়োটা করোলা এক্সিউ, গাড়ির রং-সিলভার কালার, মোঃ আবু হায়াত জনি (২৮), পিতা-কামাল হোসেন, গ্রাম ও ডাক-বলশা, থানা ও জেলা-মাদারীপুর, (গাড়ির চালক), রবিউল আলম রাব্বি (২৯), পিতা-মোঃ অলিউল্লাহ বেপারী, গ্রাম ও ডাক-মিঝমিঝি পূর্বপাড়া, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ ও জেলা-নারায়নগঞ্জ, (২য় আসনধারী)
আটককৃত মালামালের সিজারমূল্য যথাক্রমে উল্লেখ করা হলো, ১৫.৮০০ কেজি স্বর্ণ (১৩৫টি বার) ১৩,৫৮,৮০,০০০ টাকা ৩ টি প্রাইভেটকার ৪৫,০০,০০০ টাকা ৫টি এন্ড্রোয়েড মোবাইল (সীমসহ)-৭৫,০০,০০০ টাকা ১টি এন্ড্রোয়েড মোবাইল (সীমসহ)- ৭,০০০ টাকা এবং
৫ টি বাটন মোবাইল – ৬,০০০ টাকা
সর্বমোট সিজার মূল্য – ১৪,০৪,৬৮,০০০ (চৌদ্দ কোটি চার লক্ষ আটষট্টি হাজার) টাকা
আটককৃত স্বর্ণ, প্রাইভেটকারসহ আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কাযক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।