নিজস্ব প্রতিনিধি : টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র পৃথক অভিযানে ১.০৬৪ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস ৬০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১৮৫ বোতল বার্মিজ মদ এবং ২৫০ প্যাকেট বিদেশী সিগারেটসহ ৩ জন আটক হয়েছে, এ খবর নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ, বিজিবিএমএস।
বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নকল্পে মাঠ পর্যায়ে বিজিবি’র গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযানিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার ২৭ মে, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত পৃথক দুটি অভিযানে ১.০৬৪ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৬০,০০০ পিস ইয়াবা, ১৮৫ বোতল বার্মিজ মদ এবং ২৫০ প্যাকেট বিদেশী সিগারেটসহ ৩ জন মাদক কারবারীকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার ২৭ মে, দুপুরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ হোয়াইক্যং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ কেরেঙ্গাঘোনা এলাকা দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাটালিয়ন সদর হতে ভারপ্রাপ্ত অপারেশন অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহলদল এবং হোয়ইক্যং বিওপি হতে একটি টহলদল বর্ণিত স্থানে গমন করতঃ বেড়ীবাঁধের আঁড় নিয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে।
কিছুক্ষণ পর বিজিবি টহলদল ২০-২৫ জন ব্যক্তিকে বস্তা কাঁধে নিয়ে মায়ানমার হতে সীমান্তের শূন্য লাইন অতিক্রম করে কেরেঙ্গাঘোনা খালের কিনারায় আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক পরিলক্ষিত হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।
উক্ত ব্যক্তিরা দুর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় টহলদল টেকনাফের কেরেঙ্গাঘোনা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে মোঃ জাহেদ আলম (২৮) এবং উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা নূর সালাম এর ছেলে মোঃ আমিন (২৫)-কে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় অন্যরা পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে ফেলে যাওয়া ৭টি প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করে তার ভেতর হতে ১.০৬৪ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৮৫ বোতল বার্মিজ মদ, ২৫০ প্যাকেট বিদেশী সিগারেট এবং ৩.৫ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ করতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে, গতকাল শনিবার ূ৭ মে, দুপুরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অত্র ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ লেদা বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ লেদাখাল এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্যের একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাচার হতে পারে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে লেদা বিওপির একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত স্থানে গমণ করতঃ বেড়ীবাঁধের আড়ি পেতে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে।
কিছুক্ষণ পর একজন ব্যক্তিকে একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে সীমান্তের শূন্য লাইন হতে বেড়ীবাঁধের দিকে আসতে দেখে এবং তার গতিবিধি সন্দেহজনক পরিলক্ষিত হওয়ায় টহলদল তাকে চ্যালেঞ্জ করে। বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই উক্ত ব্যক্তি তার হাতে থাকা ব্যাগটি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় টহলদল তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। সে টেকনাফের আলী খালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা কামাল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম বলে জানা যায়। পরবর্তীতে বিজিবি টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ উদ্ধার করে তার ভেতর হতে ৬০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করে।
আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতঃ ক্রিস্টাল মেথ আইস, ইয়াবা ট্যাবলেট, বার্মিজ মদ, বিদেশী সিগারেট এবং কারেন্ট জালসহ টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ, বিজিবিএমএস, জানান সিমান্ত এলাকা রক্ষার পাশাপাশি বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের এধরণের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।