উদ্ধারকৃত ইয়াবার চালান।
নিজস্ব প্রতিনিধি : বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি যথাযথ বাস্তবায়নকল্পে মাঠ পর্যায়ে বিজিবি’র গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযানিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অভিযানে ৩,৩০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে, এ খবর নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ, বিজিবিএমএস।
জানা গেছে, গতকাল রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের উর্ধতন কর্মকর্তারা জানতে পারে, বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ নাজিরপাড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ আলুগোলা নামক এলাকা দিয়ে মাদকের একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের সঠিক ও সার্বিক দিকনির্দেশনায় ভারপ্রাপ্ত অপারেশন অফিসারের নেতৃত্বে ব্যাটালিয়ন সদর এবং নাজিরপাড়া বিওপি হতে দুইটি চোরাচালান বিরোধী টহলদল উল্লেখিত এলাকায় গিয়ে কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে আলুগোলা (ভাংগা) মাছের প্রজেক্টের আইলে আড়ি পেতে কৌশলগত অবস্থান নেয় ।
আনুমানিক রাত ১১ টা ১০ মিনিটের সময় টহলদল তিনজন ব্যক্তিকে তিনটি কালো পলিথিনের ব্যাগ হাতে নিয়ে বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করে সীমান্তের শূন্য লাইন হতে বর্ণিত স্থানের দিকে আসতে দেখে।
তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই তাদের হাতে থাকা তিনটি পলিথিনের ব্যাগ ফেলে দিয়ে দ্রুত দৌড়ে নাফ নদীর পার্শ্বে কেওড়া বাগানের ভিতরে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা কালে মাদক চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া তিনটি পলিথিনের ব্যাগ উদ্ধার করে তার ভেতর থেকে ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় ।
উক্ত অভিযান চলাকালীন আরও জানা যায়, ইয়াবার আরেকটি চালান উল্লেখিত এলাকা দিয়ে পাচার হতে পারে, এর পরিপ্রেক্ষিতে টহলদল কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে উল্লেখিত এলাকার কেওড়া বাগান এবং বেড়ীবাঁধে আড়ি পেতে কৌশলগত অবস্থান নেয় ।
পরবর্তীতে শনিবার ১৫ জুলাই, আনুমানিক সকাল ৬ টা ২৫ মিনিটের সময় পূর্ব থেকেই অবস্থানরত টহলদল নাফ নদী পার হয়ে তিনজন ব্যক্তিকে একটি প্লাষ্টিকের বস্তা কাঁধে নিয়ে বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করে আলুগোলা মাছের প্রজেক্টের দিকে আসতে দেখে।
তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় বিজিবি’র টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাটি ফেলে দিয়ে বর্ণিত সময় মাছের প্রজেক্টে অনেক শ্রমিকের কাজের সুযোগে দ্রুত দৌড় দিয়ে নাফ নদীর পার্শ্বে অবস্থিত ঘন কেওড়া বাগানের ভিতরে পালিয়ে যায়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা কালে মাদক চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া বস্তার ভিতর হতে ১,৮০,০০০ (এক লক্ষ আশি হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করে। উক্ত অভিযানে সর্বমোট ৩,৩০,০০০ (তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় ।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের টহলদল কর্তৃক উক্ত এলাকায় অধিকতর অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন চোরাকারবারীকে কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
তবে চোরাকারবারীদেরকে সনাক্ত করার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।