মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে সর্বোতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা ——– মতিয়া চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ এত রক্ত ও বাঁধার মধ্যে শেখ হাসিনা যেভাবে ফিরে এসেছেন সেভাবেই তিনি পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে, মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে সর্বোতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান বাস্তবায়নে সর্বোতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করে চলেছেন। আজকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের এই মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পৌঁছে গেছে।
গতকাল শনিবার, ১২ অগাস্ট, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী।
সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এ সময় বলেন, “১৫ই অগাস্ট আমাদের জন্য লজ্জা, ঘৃণা ও অপমানের চাবুক। এর চাইতে কোন চাবুক বাঙালির পিঠে পড়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। আমরা এমনই এক দেশে বসবাস করি যে দেশটি এনে দিয়েছেন আমাদের জাতীয় পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে বাংলায় কথা বলা ও বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা লোকই কিন্তু হত্যা করেছে। তারপর থেকে একের পর এক দৃশ্যপট যে পরিবর্তন হয়েছে তাঁতেই বাঙালির অশুভ আঁতাতের ঘটনা ফুটে উঠেছে। কিন্তু তারপরও বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এসেছেন। তিনি এসে ৮১ সালে এই দলের হাল ধরেছেন।”
বেগম মতিয়া চৌধুরী আরো বলেন, “জনগণ যেমন শেখ হাসিনার সাথে ছিল তেমনি শেখ হাসিনাও কখনো জনগণকে দূরে রাখেননি। শুধু ৭৫ এর হত্যাকাণ্ড নয়। এরপরও শেখ হাসিনা যাতে দেশে না আসতে পারে তার প্রচেষ্টাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনগণের শক্তিতে হাজার বাধার মধ্যেও শেখ হাসিনা ফিরে এসেছেন। তাকে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারেনি।”
মতিয়া চৌধুরী বলেন, “আমরা জানি — মানুষের চাহিদার কোন শেষ নেই, উন্নয়নেরও কোন শেষ নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই উন্নয়নের চাহিদা অবশ্যই থাকবে। না হলে মানুষ এগোতে পারবে না। মানুষই তার উন্নয়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সর্বোতভাবে সে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন এবং যাবেন। এখন আমাদের শুধু তার সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবেই সে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।”
খুনী জিয়া জীবিত থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যায় অবশ্যই তার দণ্ড হতো ——-ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ খুনী জিয়াউর রহমান জীবিত থাকলে তাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যার করার জন্য অবশ্যই সাজা দেওয়া হতো, দণ্ড দেওয়া হতো বলে মন্তব্য করেছেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “মার্চ মাসে খুনি রশিদ, খুনি ফারুক তাকে (জিয়াউর রহমান) জানিয়েছেন যে, আমরা রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করতে চাচ্ছি। ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ থাকাকালীন সেনানিবাসে ওনার বাসায় গিয়ে অধস্তন কর্মকর্তারা তাকে জানালো যে, তারা এরকম রাষ্ট্রদ্রোহ কার্যকলাপে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে যে, উনি তখন কি দায়িত্ব পালন করলেন, কি ব্যবস্থা নিলেন? মার্চ থেকে অগাস্ট পর্যন্ত উনি ওনার ঊর্ধ্বতন কারো কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেননি। বরং উনি বলেছেন — ইউ গো এহেড। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন অধস্তন কর্মকর্তাকে বলেন — ইউ গো এহেড — সেনা শিষ্টাচারে এটার মানে হলো, ইট ইজ এন অর্ডার। এন অর্ডার টু জুনিয়র অফিসার — তোমরা রাষ্ট্রপতিকে গিয়ে হত্যা করো। এবং ১৫ অগাস্ট ঘটনা ঘটানোর পরে যারা সেনাসদরে বাধা দেওয়ার চিন্তা করেছিল বা চেষ্টা করেছিল — খুনি রশিদ-ফারুকের নেতৃত্বে তাদেরকে আটক করে নিয়ে গিয়েছিল। তারা নিয়ে গিয়েছিল খুনি জিয়াউর রহমানের কাছে। কেন? কারণ উনি তাদেরকে শেল্টার দেবেন। সেটা নিশ্চত ছিল। সেজন্যই তার কাছে গিয়েছিল এবং যারা বাধা দিতে চেষ্টা করেছেন, খুনি জিয়াউর রহমান তাদেরকে আটক করেছেন। আর যারা খুনি তিনি তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন, তাদেরকে মুক্ত রেখেছেন। এই যে নেক্সাস (বন্ধন), এই যে রিলেশনশিপ — এতেই প্রমাণ হয় যে, সেখানে ষড়যন্ত্র ছিল, যোগসাজশ ছিল। যার ফলশ্রুতিতে উনি (জিয়াউর রহমান) ওনার ভূমিকা পালন করেছেন। ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, তার পুরো উল্টো করে উনি খুনিদের পক্ষে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পরবর্তীতে বিভিন্ন কার্যক্রমে সেসব বিষয় আরো পরিষ্কার হয়। এ দুটি ঘটনায় যথেষ্ট যে — জিয়াউর রহমানের ষড়যন্ত্র এবং এ হত্যাকাণ্ডের সাথে থেকে নেপথ্যে দায়িত্ব পালন প্রমাণ করা — যেটিকে আমরা আইনের ভাষায় বলি, বিয়ন্ড রিজনেবল ডাউট, সে বিয়ন্ড রিজনেবল ডাউট প্রমাণ করা। খুনি জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা পরিচালনায় সময় জীবিত থাকতেন, তাহলে অবশ্যই তাকে সাজা এবং দণ্ড দেওয়া হতো।”
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মানবতা ভূলুণ্ঠিত ও সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সংবাদ জানানোর পর খুনি জিয়া বলেছিল – সো হোয়াট। ভাইস প্রেসিডেন্ট আছে, সংবিধান আছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, ভাইস প্রেসিডেন্টকেও ক্ষমতা দেওয়া হয়নি, সংবিধানও বাস্তবায়ন করা হয়নি।”
নতুন করে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় বলেন, “কথায় কথায় আজকে শুনি যে — সংবিধান কিছু না। ইচ্ছে করলে ফেলে দিতে পারি, ইচ্ছে করলে ছিঁড়ে ফেলতে পারি, ইচ্ছে করলে পরিবর্তন করতে পারি। যারা এটা বলছেন, এটাই স্বাভাবিক যে তারা এটা বলবেন। কারণ তাদের ইতিহাস তা-ই বলে। তারা সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করে, কাটাছেড়া করে, সংবিধানকে রঙিন করে তারা ক্ষমতায় গিয়েছিল। বারবার সেভাবেই তারা ক্ষমতায় যেতে অভ্যস্থ। তাদের কাছে সংবিধানের কোনো মূল্য নেই, গণতন্ত্রের কোনো মূল্য নেই। কিন্তু আজকে আমাদেরকে জাতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সংবিধানে কোন ব্যত্যয় করে গণতন্ত্রকে আর ভূলুণ্ঠিত করা যাবে না। কারণ, গণতন্ত্র বাস্তবায়নের মূল হাতিয়ারই হলো সংবিধান। সংবিধানের বাইরে গণতন্ত্র বাস্তবায়ন হতে পারে না।
ডিইউজে এর সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনসহ সংগঠনটির বিভিন্ন কমিটির সাবেক নেতৃবৃন্দ।