নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্রকে পদদলিত করতে চায় বিএনপি জামাত। এরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতায় যেতে চায়।
শনিবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি জামাতের খুনের রাজনীতি, চক্রান্তের রাজনীতি ও ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে নিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এদের অপকর্মের বিরুদ্ধে আমাদের জনমত তৈরি করতে হবে। দেশের ১৭ কোটি মানুষকে এদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।এরা সুযোগ পেলেই দেশের মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। বিএনপি জামাত কখনোই দেশের মানুষের কথা চিন্তা করেনা।তারা যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় গিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। তারা তার সুযোগ্য সন্তান যিনি প্রবাসে থেকে দেশকে ডিজিটালাইজ করার জন্য দিনরাত কাজ করছেন সজীব ওয়াজেদ জয়, তাকেও দেশের বাহিরে হত্যা করতে চায়। তারা সুযোগ পেলে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ মেয়ে শেখ রেহানা যিনি কোন প্রকার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় তাকেও হত্যা করবে। বিএনপি তাদের খুনের চরিত্র থেকে বের হতে পারছে না। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও জাতির পিতার আদর্শকে ধ্বংস করা। তারা যদি সেদিন সুযোগ পেতো তাহলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকেও হত্যা করত। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো,একটি আত্মনির্ভরশীল ও সম্মানিত জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করা। তিনি চেয়েছিলেন একটি সোনার বাংলাদেশ গড়তে, যেখানে সবাই মিলে মিশে থাকবে। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি এটি মেনে নিতে পারেনি,তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
নাছিম বলেন,জাতির পিতা ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন। তিনি তার চূড়ান্ত রূপ দিয়ে যাওয়ার আগেই খুনিরা তাকে হত্যা করেছে। কারণ খুনিরা চায়নি বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হোক। ১৯৭১ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট নিয়েছে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। মহান মুক্তিযুদ্ধের যে লক্ষ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সেটিকে তারা ধ্বংস করতে চেয়েছে।তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের তাবেদার রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করেছে। এই ষড়যন্ত্রে যেমন দেশীয় বেইমান গোষ্ঠী ও বিশ্বাসঘাতকেরা রয়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও ছিল।
তিনি বলেন,জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা করার জন্য খুনী জিয়া মোস্তাক গংরা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। পরবর্তীতে এরশাদ ও খালেদা জিয়া তাদের পুরস্কৃত করে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়াসহ এমন কোন ঘৃণিত কাজ নেই যা তারা করেনি। এটি আমাদের কলঙ্কিত করেছে। দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমাদের সংবিধানকে রক্ষা করেছেন এবং বাংলার মাটিতে খুনিদের বিচার ও ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন।
তিনি আরও বলেন,আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে টানা ৪র্থ বারের মত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ডা. ফজলে রাব্বি মন্ডল আতার সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কৃষিবিদ ডা. সাইফুল বসারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কৃষিবিদ ড. নাহিদ রশীদ, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ডা. এমদাদুল হক তালুকদার, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের মহাসচিব কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশনের মহাসচিব কৃষিবিদ ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা প্রমুখ।