হঠাৎ করে উত্থানের চেষ্টা এখন বড় ব্যাধি : গণপূর্তমন্ত্রী

রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ করে উত্থানের প্রচেষ্টা বর্তমান সময়ের বড় ব্যাধি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদফতর অডিটোরিয়ামে জাইকা এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সুশাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির তিনি এ মন্তব্য করেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, অনেকেই শর্টকাট উপায়ে এগোতে চায়। কেউ গ্রুপ অব কোম্পানিজের মালিক হতে চায়, কেউ কোটি টাকা আয় করতে চায়, আবার কেউ দ্রুততার সঙ্গে চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হতে চায়।
তিনি বলেন, হঠাৎ বড় হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সম্পদ আহরণে সবাই ব্যস্ত। এ প্রবণতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তন করতে হবে। ঐকান্তিক ইচ্ছা, গভীর মনোনিবেশ, অধ্যাবসায় ও নিরলস প্রচেষ্টা থাকলে সাফল্য আসতে বাধ্য।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, চাকরিজীবী সবাই সততা অবলম্বন করছেন তা নয়, আবার সিস্টেম একেবারে স্বচ্ছ তাও সঠিক নয়। টেন্ডার পদ্ধতি ও ঠিকাদারদের কাজের পদ্ধতির কারণে প্রকৌশলীরা ভয় পেয়ে ফাইলে হাত না দিলে উন্নয়ন আটকে যাবে। তাদের ভয় যুক্তিসঙ্গত। আমরা কাজের সিস্টেমকে এখনো আপডেট করতে পারিনি। কাজেই কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হবেই। তবে দেখা উচিত, এই বিচ্যুতি ইচ্ছাকৃত না প্রয়োজনের তাগিদে। এখন কাজের পদ্ধতি এমন যে, নিয়ম প্রতিপালনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সুযোগ না দিয়ে জোর করলে প্রকৌশলীদের কিছুই করার থাকে না। সিস্টেমের কারণে কাজে ব্যত্যয় ঘটলে সামান্য ত্রুটির জন্য প্রকৌশলীরা যদি হয়রানির শিকার হন, তাহলে তাদের কর্মোদ্যম ও মানসিকতা ভেঙে যাবে। এ কারণে উন্নয়নের মহাসোপানে অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে।
এ সময় অহেতুক, তথ্যহীন সংবাদের ভিত্তিতে গণপূর্ত অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য মন্ত্রী দুদক কমিশনারকে অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কেউ অন্যায় ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে তাদের ছাড় দিতে রাজি নই। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার যেন না হয়, সেটা দেখতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সকল সহযোগিতা করতে চাই। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। অভিযুক্তরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।
আত্মোপলব্ধি আর আত্মসমালোচনার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শুধু আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য নিজের হাতকে বিস্তার করতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য কিছু করার আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। আসুন সকলে মিলে দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। সুশাসন এবং উন্নয়নের জন্য সকলে মিলে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। তাহলে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বের বুকে আলোকজ্জ্বল জায়গায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং সভাপতিত্ব করেন জাইকা এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোজ্জাম্মেল হক খান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও জাইকা এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *