নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিং সংস্কৃতি বন্ধে স্কোয়াড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি র্যাগিং আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের দ্রুত প্রতিকার পাইয়ে দেয়ার জন্য অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি গঠন করতে তিন মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিং সংস্কৃতি বন্ধে কমিটি গঠন করতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। রুলে শিক্ষার্থীদের জীবন ও সম্মানরক্ষায় র্যাগিং বন্ধে নীতিমালা করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
এর আগে গত বুধবার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধ ও র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
গত বছরের ৯ অক্টোবর দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধ ও র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান এ আইনজীবী। স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক সহায়তায় জন্য অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন ও মনিটরিংয়ের জন্য অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড গঠনে সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা নোটিশে বলা হয়।
পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা সিনিয়রদের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হন। সিনিয়ররা নতুনদের কান ধরে ওঠা বসা করানো, রড দিয়ে পেটানো, পানিতে চুবানো, উঁচু ভবন থেকে লাফ দেয়ানো, সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা দেওয়া, গাছে ওঠানো, ভবনের কার্নিশ দিয়ে হাঁটানো, এমনকি দিগম্বর পর্যন্ত করে।
এছাড়াও গালিগালাজ করা, কুৎসা রটানো, নজরদারি করা ও নিয়মিত খবরদারির মতো নানা ধরনের মানসিক নির্যাতনও করা হয়। এজন্য র্যাগিংয়ের নামে অপসংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করতে হবে।