পানি রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব-দ্বীপ তথা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ সুপেয় পানি রপ্তানি করতে পারবে মনে মনে করছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ যেমন ডেল্টা প্ল্যান নিয়েছে তেমনি পরিকল্পনা প্রতিবেশি দেশগুলো হাতে নেয়নি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। পানির উৎস এখানে অফুরন্ত। আমরা এর যথাযথ ব্যবহার করবো।
ঢাকা মেগাসিটির উষ্ণায়ণ প্রশন কৌশল: টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োগ’ শীর্ষক এক সেমিনারে রোববার ড. শামসুল আলম একথা বলেন।
বাংলাদেশ ইনস্ট্রিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাডিজ (বিজ) মিলনায়তনে আস্ট্রেলিয়ার কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ভবিষ্যতকে সামনে রেখে ২০১৮ সালে ডেল্টা প্ল্যান বা বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ হাতে নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষিত রেখে উন্নয়নের ধারাবহিকতায় কি কি করণীয় তা রয়েছে এই পরিকল্পনায়। এর মধ্যে বন্যা, নদীভাঙন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশলও নির্ধারণ করা হয়েছে।
শামসুল আলম বলেন, আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে। আমরা ছাদ-কৃষির কথা বলছি। এটা নিয়ে ভালোভাবে গবেষণার প্রয়োজন আছে। কারণ ছাদ-কৃষিতে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার হচ্ছে। এমনিতেই প্রতিবছর ভূগর্ভস্থ পানির স্থর নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই ছাদ-কৃষির জন্য বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে।
এসময় তিনি সারা দেশে ভূগর্ভস্থ পানির ম্যাপিং করার প্রয়োজনিয়তা তুলে ধরেন। এটি করা হলে সারা দেশে ভূগর্ভস্থ পানির একটি চিত্র সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যাবে বলেও জানান পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য।
সভাপতির বক্তব্যে সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের গুজরাটে বাড়িতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা বাধ্যতামূলক। এমনটা ঢাকাতেও করা উচিৎ।’
সেমিনারে ‘মিটিগেশন স্ট্রাটেজিজ ফর আরবান মাইক্রো ক্লাইমেট অব ঢাকা মেগাসিটি টু রিডিউস অ্যাডভার্স ক্রাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক আশারাফ দেওয়ান এবং বিজের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির।
অন্যদের মধ্যে বিজের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এম. ফজলুল করিম, কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইকনোমিক্স, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রোপার্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল সলিম সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। প্যানেল ডিসকাশনে সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ডেভেলমেন্টের পরিচালক ড. সলিমুল হক।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরের তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা নগরিক জীবন এবং বাস্তুসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর টিকে থাকার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে রোগের প্রকোপও বাড়ছে।
বক্তারা আরও বলেন, এছাড়া এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা মানুষের শরীর এবং মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধনে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ এবং ঘনবসতিপূণ এলাকায় যথেষ্ট পরিমান জলাশয় নিশ্চিত করাসহ কার্যকরী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *