নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে যাচ্ছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের বহুমুখী পদ্মা সেতু। আর এই সেতুর দুই অংশে অর্থাৎ ঢাকা থেকে মাওয়া এবং পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চারলেনের এক্সপ্রেসওয়ে এখন পুরো দৃশ্যমান, যা শিগগিরই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মূল পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার বাদ দিয়ে চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এবং মাদারীপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের প্রথম এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বেশ জোরালো ভাবেই এগিয়ে চলছে। প্রধান সড়কের কাজ প্রায় শেষের দিকে। চার লেনের এই মহাসড়কের আন্ডারপাস, ওভারপাস নির্মাণের কাজ শেষ। চার লেনের এই এক্সেপ্রেসওয়ের বেশিরভাগ অংশই চলাচলের উপযোগী।
এখন চলছে রাস্তার দু’পাশের সড়কের পাশের রেলিং বসানো এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের মাঝখানে বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এক্সপ্রেসের কাজ শেষ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
নতুন এই মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তবে কিছু জায়গায় কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় সে জায়গাগুলোতে গাড়ি ব্যতিক্রমী রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া চারলেনের এই মহাসড়কের দু’পাশে পাঁচফুট করে আরও দুটি লেন করা হচ্ছে, যেগুলো দিয়ে স্থানীয় যানবাহন চলাচল করতে পারবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে ৬ লেনে গিয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে গত সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দেশের প্রধান এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষের পথে। ঢাকা থেকে মাওয়া এবং মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের এক্সপ্রেস এর কাজ ২০২০ সালের মার্চ মাস নাগাদ উদ্বোধন করা যেতে পারে। যে সকল রাস্তা দুইলেনের আছে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে চার লেনে উন্নীত করা হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এক্সপ্রেসওয়ের পুরোটাই বাংলাদেশের সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। এর কাজ করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
তাছাড়া, এই প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কে সেতু থাকছে ৩১টি (পিসি গার্ডার ২০টি ও আরসিসি ১১টি)। এর মধ্যে বড় সেতু ধলেশ্বরী-১, ধলেশ্বরী-২ এবং আড়িয়াল খাঁ। এছাড়াও ৪৫টি কালভার্ট, ৩টি ফ্লাইওভার, গ্রেট সেপারেটর হিসেবে ১৫টি আন্ডারপাস ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া এবং ভাঙ্গায় ২টি ইন্টারচেঞ্জ।
২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর কাজ শুরু হয় এই এক্সপ্রেসওয়ের। এর প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তাছাড়া, ২০২১ সালে খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। সেতু দিয়ে একই সাথে চলবে বাস ও ট্রেন।