# রয়েল ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) প্রশ্নবিদ্ধ করছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এর নিরপেক্ষতার # একই গেটাপে খন্ডামালী নামে পাস করা পাউডার কে আমলকী প্লাস সিরাপ হিসেবে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে # ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত আমলকী প্লাস (আমলকী রসায়ন) সিরাপ তৈরি ও বাজারজাত করছে বেপরোয়া ভাবে #
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার সাভার এলাকার হেমায়েতপুরের রয়েল ল্যাবরেটরিজ আয়ু এর বিরুদ্ধে আয়ুর্বেদিক ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাতের নামে কালার, ফ্লেভার ও কেমিক্যাল ব্যাবহার করে ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাত করার গুরুতর এক অভিযোগ উঠেছে। উক্ত কোম্পানির উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -আয়ু-১৩০ । প্রতিষ্ঠানটির ব্যানারে আমলকি-প্লাস, এ্যাপেল-প্লাস ও পুদিনা-প্লাস নামে দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ঔষধের বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট।
তাছাড়া ভিটামিন ঔষধে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ ক্ষতিকারক কেমিক্যাল এবং যৌন উত্তেজক ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন কালে সিলডেনাফিন সাইট্রেড নামক ভায়াগ্রার উপাদান ব্যাবহার করে তৈরি করা হচ্ছে যথাক্রমে, রয়েল-গোল্ড, ফেরাপ্লেক্স, ইরেকটন, কার্ডিওলেক্স, টাসফিট, হাইরেক্স, ডাইজাভিট, রয়েলভিট, রুচিরাজ, কারমোজিন, লিভারেক্স, মিকোভাস, গ্যাসরিলিফ, সিভিটন, ওরেঞ্জ-ই, সেপোভাক্স ও বেবিসিড, বেবিসিড নামক সিরাপের মোড়কে বাচ্চাদের ছবি দেওয়া আছে, এটা কি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী আইনসিদ্ধ ?
স্বাস্থ্যসেবায় চরম হুমকি হলেও সাভারের ড্রাগ সুপারের নজরদারির অভাব ও অনৈতিক সহযোগিতার কারণে রয়েল ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) নামক প্রতিষ্ঠান টি আজ বেপরোয়া থেকে আরও বেপরোয়া ভাবে ঔষধের বিভিন্ন পাইকারী ব্যাবসায়ীদের চাহিদা মাফিক নিষিদ্ধ সব ঔষধ তৈরি করে রাতের আঁধারে সরবরাহ করার মতো অভিযোগ ও বাজারে প্রচলিত আছে। ফলে হার্টব্লক, মেদভুড়ি ও ডায়াবেটিস নিরাময়ের শ্লোগান দিয়ে বিক্রি করছে ডিউরেটন নামের সিরাপ। বিগত দিনে আমলকি-প্লাস তৈরি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ হওয়ার পরই ডিউরেটন সিরাপ বিক্রি শুরু করে।
প্রতিষ্ঠানটি আমলকি-প্লাস বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে রয়েল আমলকী প্লাস সিরাপ এর নমুনা পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে আমলকী-প্লাস সিরাপে আমলকি নেই। শুধুমাত্র মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকারক সিএমসি নামক কেমিক্যাল, কালার ও ফ্লেভার দিয়ে তৈরি।
বিষয়টি নিয়ে পত্র- পত্রিকায় শিরোনাম হওয়ার পরই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ১৯ নভেম্বর ২০১৫ সালে ভেজাল ও নিম্নমানের, দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিরাপটির উৎপাদন ও বাজারজাত নিষিদ্ধ করে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা পরিপন্থী সেই নিষিদ্ধ হওয়া আমলকি-প্লাস এখন ও মিটফোর্ড, সাভারের তমা ফার্মেসী, গাজীপুর, টাংগাইলের মধুপুর ফার্মেসী ও নোয়াখালীসহ সারাদেশের ঔষধের পাইকারী ও খুচরা দোকান রীতিমতো বেশ দাপটের সাথে ই বাজার দখল করে আছে।
বিতর্কিত কোম্পানীর মালিক নিজেকে সাংবাদিক ও আওয়ামী কর্মী পরিচয়ে ড্রাগ প্রশাসনকে জিম্মি করে জেলা ড্রাগ সুপারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত আমলকি-প্লাস দুর্দান্ত প্রতাপে বাজারজাত করার মতো গুরুতর অভিযোগ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত কারমোজিন নিয়ে দেশ ল্যাবঃ আয়ু এবং রুচিরাজ নিয়ে সিলেটের ইস্টার্ন ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্দ্ব হয়। বর্তমানে আমলকি-প্লাস নিয়ে গোপালগঞ্জের একটিভ ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্দ্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কারণ উক্ত প্রতিষ্ঠানটির অনুকুলে আমলকি-প্লাস এর অনুমোদন করানো আছে। তথ্য মতে, সুচতুর রয়েল ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) এর এমডি শিশির তার গাড়িতে সাংবাদিক স্টিকার লাগিয়ে বেশ দাপটের সাথে-ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করে সব ক্ষেত্রেই পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবন নিয়ে কারসাজী ও প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির আমলকি-প্লাস ও ডিউরেটন পরিক্ষা করলেই ঔষধ নামক নীরব ঘাতক আমলকী প্লাস বাণিজ্যের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
মানুষের স্বাস্থ্যসেবার বিষফোড়া রয়েল ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) নামক ঔষধ কোম্পানীর বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সচেতন মহল ।