মাত্র কয়েক ঘণ্টায় তৈরি হচ্ছে ইন্টার্ন পেপার গবেষণাপত্র

অপরাধ আইন ও আদালত রাজধানী শিক্ষাঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাত্র কয়েক ঘণ্টায় তৈরি হয়ে যাচ্ছে উচ্চশিক্ষার ইন্টার্ন পেপার থেকে শুরু করে গবেষণাপত্র। পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১০০ টাকায়। রাজধানীর নীলক্ষেতের দোকানগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব জালিয়াতি অনেক শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার গবেষণার মূল ভিত্তি। গবেষণা চুরি বন্ধে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি যাচাই-বাছাই করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ শিক্ষাবিদদের।
রাজধানীর নীলক্ষেত। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা, সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন এখানে বইসহ শিক্ষাসংক্রান্ত নানা প্রয়োজনে।
তবে ভালো কাজের পাশাপাশি নেতিবাচক খবরের শিরোনামও হয় এ মার্কেট। সম্প্রতি গবেষণা সংক্রান্ত কাজে হুবহু থিসিস পেপার বেচাকেনার মার্কেটের পরিচিতিও পেয়েছে। এখানে অর্থের বিনিময়ে হরহামেশাই তৈরি করা হয় নানা ধরনের নকল পেপার।
গবেষণা চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার চিত্র উঠে আসে গণমাধ্যমে। এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে শিক্ষার্থী পরিচয়ে নীলক্ষেতে হাজির হয় গণমাধ্যম।
গবেষণাপত্রের সাংকেতিক নাম প্লাস্টিক কার্ড। সরেজমিনে দেখা যায় তাদের সংগ্রহে রয়েছে হাজার হাজার গবেষণাপত্র। বাঁধাই করাসহ এসব গবেষণাপত্রের পুরো কাজ নিজের নামে করে নিতে লাগবে ৬শ’ টাকা। আর সফট কপি মিলবে মাত্র ১শ’ টাকায়। নীলক্ষেতে এমন দোকান আছে ২০টির বেশি।
গবেষণাপত্র চুরির এসব ঘটনা যেমন শিক্ষার্থীরা জানেন, তেমনি অনেক ব্যবসায়ীও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন অকপটে।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনেকে এসে জিজ্ঞেস করেন এই এই বিষয়, এ রকম কোনো থিসিস পেপার আছে কিনা। একটা সিন্ডিকেটই আছে এটার, কিছু কিছু দোকানদার এটা রাখে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্তর্জাতিক জার্নাল থেকে কিছু কথা রাখে, বাকিটা নীলক্ষেত থেকে নিয়ে মোটামুটি কপি-পেস্ট একটা গবেষণাপত্র করে দেয়।
এই অবস্থায় অন্যের মৌলিক গবেষণা কর্ম নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার প্রবণতা বন্ধে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি সচেতন হতে হবে শিক্ষকদেরও-এমনটাই বলছেন শিক্ষাবিদরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বিদেশ থেকেও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে যে আমরা এসব কাজ করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যখনই এ ধরনের কোনো বিষয় জানা যায়, তখনই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
নীলক্ষেতের এসব দোকানে নকল মনোগ্রাম ও জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে দেয়ার অভিযোগও দীর্ঘদিনের।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *