বিশেষ প্রতিবেদক : ঢাকঢোল পিটিয়ে চালানো হয় অভিযান। তারপরও দখলমুক্ত হচ্ছে না রাজধানীর ফুটপাতগুলো। প্রভাবশালীদের চাঁদাবাজিতেই হকারদের কর্তৃত্ব বহাল থাকে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এদিকে এ দায় নিতে রাজি নয় সিটি করপোরেশন কিংবা মহানগর পুলিশ। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলছেন, উচ্ছেদের পর নজরদারি না থাকার কারণেই দখলমুক্ত থাকছে না ফুটপাত। আর জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর জোর দিচ্ছে পুলিশ।
ফুটপাত তো বটেই, সড়ক দখল করে রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানের সব সড়কেই চলছে হকারদের রমরমা ব্যবসা। ফুটপাত দখলে নেয়ায় রাজধানীর অনেক স্থানেই সংকুচিত মানুষের চলার পথ। বাড়ছে যানজট। কোথাও অবৈধ স্থাপনা, বিভিন্ন মালামাল রেখে দেয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েন পথচারীরা।
রাজধানীর ফুটপাতে হকারদের রাজত্বের নেপথ্যে রয়েছে প্রভাবশালীদের চাঁদাবাজি। দোকান ভেদে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে দৈনিক ৫০০ টাকা পর্যন্ত মাসোহারা দিতে হয় হকারদের।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হকাররা বলেন, দৈনিক দোকান শুরু করলেই ৫০০ টাকা দিতে হয়, তাহলে মাসে ১৫ হাজার টাকা এমনিতেই দিতে হচ্ছে। এ টাকা না দিলে আমরা বসতে পারবো না। লাইনম্যানকে দিতে হয়, প্রশাসন তো আছেই।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে মোট হকার দুই লাখ ৬০ হাজার। যাদের দৈনিক চাঁদা গুণতে হয় গড়ে ১৯২ টাকা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন জানান, যদি পুলিশের পক্ষে সম্ভব না হয় নজরদারি করা বা ধরে রাখা তাহলে এটা পৃথিবীর কেউ রাখতে পারবে না। আমি ১০০০ বার উচ্ছেদ করবো, তারা ১০০০ বারই বসবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা জনপ্রতিনিধি, ক্রাইম পুলিশ-ট্রাফিক পুলিশ সবাইকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পরও ফুটপাত মুক্ত রাখতে না পারার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করছেন নগর বিশ্লেষক ইকবাল হাবিব।
তিনি বলেন, এ হকার ব্যবসার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক মাস্তানরা যুক্ত। তাদেরকে তুষ্ট করার মধ্যে দিয়েই রাজনৈতিক নেতারা, নেতা হন। পুরো বিষয়টা একটা কঠোর রাজনৈতিক অনুশাসন সদিচ্ছার সাথে যুক্ততা।
পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়াও দায়ী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।