চট্টগ্রামে দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লেয়াকত আলী ও তার স্ত্রী জেসমিন আকতার।
নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লেয়াকত আলী ও তার স্ত্রী জেসমিন আকতারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জেসমিন আকতার দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ৬ লাখ ২৬ হাজার ২৬২ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেন। এ ছাড়াও তিনি দুই কোটি ৮৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬২ টাকার জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার অপরাধ করেন। এ ছাড়াও তার স্বামী মোহাম্মদ লেয়াকত আলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে তার নামে সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করার অপরাধ করেন।
লেয়াকত আলী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক ও মামলার বাদী আব্দুল মালেক বলেন, দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লেয়াকত আলীর স্ত্রী জেসমিন আকতারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সম্পদ বিবরণী দুদক কার্যালয়ে দাখিল করেন।
দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে জেসমিন আক্তার তার নামে দুই কোটি ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু দুদক যাচাই করে ১৬টি দলিল মূলে তার নামে দুই কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পায়। এক্ষেত্রে তিনি ২৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন।
এ ছাড়া তিনি সম্পদ বিবরণীতে কোনও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেননি। অথচ অনুসন্ধানকালে দুদক তার নামে ৮০ লাখ ৪৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। অর্থাৎ জেসমিন আক্তারের স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট এক কোটি ছয় লাখ ২৬ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক তার কোনও দেনার তথ্য পায়নি। তবে যাচাইকালে তার নামে পারিবারিক ব্যয়সহ তিন কোটি ৯২ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে। এ সম্পদের বিপরীতে তার বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায় এক কোটি সাত লাখ ৩৭ হাজার টাকার। অর্থাৎ তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ দুই কোটি ৮৫ লাখ ১৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।