!! গণপূর্ত অধিদপ্তরের পীর সাহেব খ্যাত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এর আস্থাভাজন ৪ জন মুরিদ প্রকৌশলী আলমগীর খান, প্রকৌশলী কাম ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক এবং মিস্টার ৫০% খ্যাত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক এর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট বড়ই ভয়ংকর !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে দেশের পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত গণপূর্ত অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী,এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কোন প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের কোন প্রকার প্রশাসনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ না করার ফলে গণপূর্ত অধিদফতরের দীর্ঘদিন যাবত প্রচলিত সিন্ডিকেট মুক্ত হয়নি। এই সিন্ডিকেট এতটাই বেপরোয়া যে কোন নিয়ম কানুনকে তারা তোয়াক্কা করছে না।সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব সহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের নাম ব্যবহার করে এরা ফায়দা হাসিল করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি সরকারকে নিজ দেশের জনগনের সুবিধার্তে অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হয়। এক্ষেত্রে অধিকাংশ উন্নয়নকাজই গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে থাকে সরকার। সরকারের গৃহীত ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য অন্যতম একটি কর্মসূচী হলো টেকসই উন্নয়ন। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে অবকাঠামো ও নির্মান খাত। আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়নে মূখ্য ভূমিকা পালন করে গনপূর্ত অধিদপ্তর। কিন্তু উপরোক্ত কর্তাব্যক্তিরাই তাদের উপর অফিসিয়াল অর্পিত দায়িত্ব পালনে দীর্ঘদিন যাবত অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে আসছে।
জানা গেছে, গনপূর্ত অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। নিয়ম অনুযায়ী ও প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। তাই যখন যা ইচ্ছা তাই তিনি করতে পারেন। তাকে যে কোন সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের ক্ষেত্রে রয়েছে তার একান্ত অনুগত কয়েকজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামে পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
কাগজে কলমে ও বাহ্যিক দৃষ্টিতে একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার। সরাসরি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে তার সম্পৃক্ততা চোখে না পড়লেও একটি বিশেষ সুবিধাবাদী কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতন হলেও এই সিন্ডিকেটটি দুর্দান্ত প্রতাপে চালিয়ে যাচ্ছে বেপরোয়া অনৈতিক কর্মকান্ড। কোন নিয়ম কানুনকে তারা তোয়াক্কা করছে না। একটি বিশেষ অঞ্চলের নামীদামী কিছু ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে এরা ফায়দা হাসিল করছে।
সম্পদের পাহাড়ে প্রকৌশলী আলমগীর খান : গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর খানের বিরুদ্ধে গণপূর্ত ডিভিশন-৬ এ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে।
আলমগীর খানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্বেও বর্তমানে ই/এম শাখার গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে তাকে পদায়ন করা হয়েছে। অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি ঢাকা শহর এবং এর আশেপাশের এলাকায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। আলমগীর খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্ত করলেই উক্ত সকল অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। কথিত রয়েছে যে, গনপূর্ত অধিদপ্তরের অন্যতম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রোকন উদ্দিনের মত আলমগীর খানও যেকোনো সময়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন।
প্রকৌশলী কাম ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ : প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ দুর্নীতিতে মহা চ্যাম্পিয়ন। শ্যালককে দিয়ে ঠিকাদারী ব্যবসা করান তিনি। তার ওস্তাদ প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ এখনও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। শ্যালকের মাধ্যমে তিনি সরাসরি ঠিকাদারীতে ব্যবসা করে হয়েছেন কোটিপতি। শুধু হাতেগোনা দু’চারজন প্রকৌশলী নন এরকম আরও শত শত রাঘব বোয়াল রয়েছে গনপূর্ত অধিদপ্তরে যারা দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারী ব্যবসায় নামে বেনামে সম্পৃক্ত।
ক্ষমতার শীর্ষে নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক : গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার তার ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর বহুতলবিশিষ্ট ভবন নির্মানের ক্ষেত্রে। দীর্ঘদিন যাবৎ মতিঝিল গনপূর্ত বিভাগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও সাইট সিলেকশনের অজুহাত দেখিয়ে শামীম আখতারের অত্যন্ত ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত গনপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ক্যাডেট কলেজের ছাত্র আতিকুল ইসলামকে একটি কমিটি বানিয়ে কাজটি হস্তান্তর করেন। উক্ত কাজ মতিঝিল গণপূর্ত বিভাগ থেকে ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-১ এ হস্তান্তরের মূল উদ্দেশ্য কয়েক কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য হাতিয়ে নেয়া। এজন্যই মূলত কমিটি করা হয়েছিল।বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীর ডাটাবেজ তৈরির কাজে সহযোগিতা করছেন আতিকুল ইসলাম। গণপূর্ত অধিদপ্তরের রক্ষনাবেক্ষন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বিভিন্ন ঠিকাদারের নিকট হতে অধিক পরিমান উৎকোচ গ্রহন করে অনুমোদিত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা হতে ৩ বছরে তিনি প্রায় ৬০ কোটি টাকার অতিরিক্ত দরপত্র আহবান করে ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-১ এ বদলী হয়ে চলে যান। এই অতিরিক্ত ৬০ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করে সুকৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
মিস্টার ৫০% তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক :
গণপূর্তের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক অসংখ্য দুর্নীতি ও অপরাধ করেও ধরাছোঁয়ার বাইরে। গণপূর্ত অধিদপ্তরে মিস্টার ফিফটি পার্সেন্ট হিসাবে অনেকের কাছেই বহুল পরিচিত তিনি। একাধিক সূত্র এবং ভুক্তভোগী ঠিকাদারদের একটি বড় অংশ তার বিরুদ্ধে থাকা সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমান বিভিন্ন গনমাধ্যমকে হস্তান্তর করেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের আস্থাভাজন হওয়ায় অধিদপ্তর জুড়ে কাউকে তিনি পরোয়া করেন না। সাবেক কর্মস্থল সাভার থাকাকালীন সময় থেকে ভুয়া বিল ভাউচার করে সরকারি টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থে বিলাসী জীবন যাপন করে আসছেন। এসব বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কমিশন দিয়ে ম্যানেজ করতেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। বর্তমানে তার সমস্ত অনিয়ম দুর্নীতির সহযোগী হিসাবে ৩ নং ডিভিশনের প্রকৌশলী কায়সার ইবনে সাইফকে কাজে লাগান। যিনি বর্তমানে তিনি তার সমস্ত কুকর্মের ছায়াসঙ্গী।
পুরো অধিদপ্তর জুড়ে এমন অসংখ্য দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী রয়েছেন যাদের রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এরা সবাই গনপূর্ত অধিদপ্তরের পীর সাহেব খ্যাত প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের অত্যন্ত আস্থাভাজন। আগামীতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পীর সাহেব খ্যাত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এ বিষয়ে আজকের দেশ ডটকম পরিবারের সদস্যদের তদন্ত টিম তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন।।