নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার গেণ্ডারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার পুরান ঢাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুক ভর্তি ১৫ বস্তা টাকা এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে র্যাব। জব্দ করা হয়েছে ৫ কোটি টাকারও বেশি এফডিআর।
রাজধানীর পুরান ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে র্যাব-৩ এর একটি দল সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় ১১৯ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে অভিযান চালায়। ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
র্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম ফয়জুল ইসলাম বলেন, নিচতলার ওই বাসায় কেউ থাকত না। বেশ সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা ছিল সবকিছু। এনু-রুপনের দুই ডজন বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা এ বাসার সন্ধান পাই।
তিনি বলেন, অভিযানে ওই বাড়িতে টাকা ভর্তি পাঁচটি সিন্দুক পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে পাওয়া গেছে পাঁচ কোটি টাকার এফডিআর এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার। সিন্দুকে পাওয়া নগদ টাকা মেশিনে গণনা চলছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে টাকার অঙ্ক ২০ থেকে ২৫ কোটি হতে পারে।
ওই বাড়িতে বেশ কিছু ক্যাসিনো সরঞ্জামও পাওয়া গেছে, যেগুলোতে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সিল লাগানো রয়েছে। র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, টাকা গণনা ও অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক এনু ছিলেন গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আর তার ভাই রুপন ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে ওয়ান্ডারার্সে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র্যাব।
পরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়ায় প্রথমে এনু ও রুপনের বাড়িতে এবং পরে তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুক ভর্তি প্রায় ৫ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেফতার হন এনু-রুপন দুই ভাই। র্যাবের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সিন্দুকে পাওয়া ওই টাকার উৎস ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোর। টাকা রাখতে জায়গা বেশি লাগে বলে কিছু অংশ দিয়ে স্বর্ণ কিনে রাখতেন তারা।
ওই ঘটনার পর মোট সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনা ও অর্থ পাচারের অভিযোগে চারটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।