পাঁচ শতাধিক নিরীহ মানুষকে গুম খুনে অভিযুক্ত কুখ্যাত জেনারেল জিয়াউল আহসানের অন্যতম সহযোগী এন বি আরের চেয়ারম্যান (যার পুরস্কার স্বরূপ কুখ্যাত জেনারেল জিয়াউল আহসানকে কাস্টমসের মেরিট সার্টিফিকেট প্রদান, যা কেবল কাস্টমস কর্মকর্তারা প্রাপ্য।
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের গর্ব ডঃ ইউনুসকে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর সেকশন ৯৩ (২) বি অনুযায়ী আয়বছর ২০০৫-২০০৬ এর পূর্বের কোনো করবর্ষের আয়কর নথি রিওপেন(অডিট/ পুনঅডিট) করার বিধান না থাকা সত্বেও উক্ত অধ্যাদেশের অবশ্যিক বিধান লঙ্ঘন করে ১৯৯৫-৯৬ আয়বছর হতে উনার নথি তথাকথিত অডিট করে ৬৬৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির কল্পিত অভিযোগ উত্থয়াপনের মাধ্যমে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়।
জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বড় অভিযোগ ছিল। ৫ শতাংশ বেশি আর্দ্রতাসহ কয়লা কিনে প্রায় ৮৪৬ কোটি টাকা গচ্চা দিয়েছে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল)। এই খনির কয়লা উত্তোলনকারী চীনের দুই প্রতিষ্ঠানের কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে ৫ দশমিক ১ শতাংশ আর্দ্রতাসহ কয়লা কেনার চুক্তি করা হয়। কিন্তু কয়লা কেনা হয়েছে ১০ শতাংশ আর্দ্রতাসহ। ( প্রথম আলো, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮)
এছাড়া বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানীর(বিসিএমসিএল) চীনা ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনর্সোটিয়াম হতে ঘুষ গ্রহণ করে সরকারী আইন-কানুন ভঙ্গ করে ১৮৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে উত্তোলনের সুযোগ করে দেন, অথচ বিষয়টি দুদকের তদন্তনাধীন।(দৈনিক যুগান্তর, প্রথম পাতা, ৩ ডিসেম্বর,২০১৯)।
সরাসরি খবরের অংশ উল্লেখ করছি, “রহস্যজনক কারণে বড়পুকুরিয়ার উৎপাদিত কয়লায় পানির আর্দ্রতা (ময়েশ্চার) পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেছে। এর ফলে সরকারের প্রত্যক্ষ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৪০ কোটি টাকা যা বিশ্লেষকদের ভাষায় সরাসরি দুর্নীতি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের পরামর্শে পেট্রোবাংলা এবং বিসিএমসিএল আর্দ্রতা পুনর্নির্ধারণ করে। সেখানে জ্বালানি বিভাগ সেটি নাকচ করে দেওয়ার রহস্য কী?” (সময়ের আলো, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯)
এনবিআর এর চেয়্যারম্যান থাকাকালীন অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে থাকলেও কোনো গণমাধ্যম তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবেদন করতে সাহস করেনি। অসংখ্য বেআইনি চালান সে সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশে অবৈধভাবে ছাড় দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, এতে দেশ ও দেশের অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক ২২ লক্ষ টাকাসহ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আটককৃত রাজস্ব কর্মকর্তা মুকুল কর্তৃক এপিবিএন, সিভিল এভিয়েশন, এনএসআই ও ডিজিএফআই এর নিকট প্রদত্ব বক্তব্যে কমিশনার আজিজুর রহমান ও এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিকের নাম প্রকাশ করলেও, চেয়ারম্যান তার উপকারভোগী বিধায় এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করা সত্বেও কোন মামলা করেননি তিনি (দৈনিক যুগান্তর, ২৬ আগস্ট ২০২২, https://t.ly/rnpkk )। (প্রমাণ ড্রাইভ লিংক https://t.ly/-XaMt ) ।সুষ্ঠূ তদন্ত হলে আরো অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশের সাধারন ছাত্রসমাজের আত্মত্যাগ ও গণঅভ্যুত্থানে পতিত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে খুন, গুম, দু্র্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের মত ঘৃন্য অপরাধ চালিয়ে যেতে যে কয়টি নিয়ামক শক্তি যুগিয়েছে, তাদের অন্যতম হল অবৈধ ও বৈষম্যমূলক পন্থায় নিজস্ব কিছু লোকের আর্থিক সক্ষমতা তৈরি ও বৃদ্ধি করা।ধারাবাহিক ৩ বার এনবিআরের চেয়ারম্যান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম জঘন্যভাবে দেশের সাধারন মানুষের উপর অন্যায্য, অন্যায় ও অযৌক্তিক পন্থায় শুল্ক-কর আরোপ করে এবং নিজস্ব কিছু ব্যাক্তি ও গ্রুফকে শুল্ক-কর ফাঁকি/অব্যাহতি দেওয়ার অবৈধ পথ তৈরি করে দিয়েছেন।
অতএব, ২০২৪ এ ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে সাধারন জনগনের আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ শাহাদাতবরন করা অগণিত শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিমকে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলপূর্বক (যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর একটি দাবি ছিল) গ্রেপ্তার ও বিচার করে জাতির প্রতি করা ঘৃনিত ও কলংকিত অপরাধের দায় মিটানো হোক।