ত্যাগী নেতারাই পদ বঞ্চিত

এইমাত্র রাজনীতি

এম এ স্বপন : আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দেশের সর্বস্তরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কোনো সরকার আমলে হয়নি। আর বর্তমানে যে হারে উন্নয়ন হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে এই দেশ বিশ্বের কাতারে মাথা উঁচু করে দাড়াতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদেক্ষেপে উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান অব্যাহত থাকায় অনিয়ম আর দুর্নীতি অনেকটাই কমেছে। তারপরও সাধারণ মানুষ আওয়ামী সরকারের উপর কিছুটা আস্থা হারিয়েছেন, একমাত্র নব্য আওয়ামী নেতাদের জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এসব পরগাছা নেতাদের মুখোশ উন্মোচন করতে জীবনের ঝুঁকি নিলেও হাইব্রিট সুবিধাভোগী নেতাদের আধিপত্য বন্ধ হচ্ছে না। এখনো কিছু হাইব্রিট নেতা কারসাজীর মাধ্যমে বড় বড় পদ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব নব্য নেতারা বিএনপি না জামাত কর্মী তা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না প্রভাবশালী আঞ্চলিক নেতাদের কারসাজীর কারণে। দেশনেত্রী সাহসীকতার সাথে দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটকারী ও টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশী অভিযানকে দেশবাসী স্বাগত জানালেও মনের দিক থেকে জনসাধারণ বিশ্বাস রাখতে পারছে না। ফলে, দলের মধ্যে খাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা হাইব্রিট কাউয়াদের কারসাজী চলমান থাকায় অনেক ত্যাগী নেতা পদ বঞ্চিত হচ্ছেন। বাস্তবতা হলো- এসব কাউয়াদের বিতাড়িত না করলে যতই উন্নয়ন হোক না কেন, অদুর ভবিষ্যতে আওয়ামীলীগের বদনাম হওয়ার সম্ভবনাই বেশী। সেহেতু জননেত্রী সাহসীকতার সাথে সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রাখলে ত্যাগী নেতারা পদ পাবেন এবং বিএনপি-জামাতপন্থী হাইব্রিটরা বিতাড়িত হবেন। মূলত: হাইব্রিট নেতাদের কারনেই আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন্য হচ্ছে। ক্ষোভের সাথে হতাশা ব্যক্ত করে এই কথাগুলো বলছেন ডা. এস.বি জয় (সঞ্জয়)। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কৃতি সন্তান ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন মতাদশে আদর্শবান হওয়ার স্বপ্নে বহু আগেই আওয়ামী লীগের রাজপথের সৈনিক বনে গেছেন। দেশে সামরিক শাসন চলাকালীন আওয়ামী নেতাদের উপর জুলুম, অত্যাচার, হামলা ও মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হলে অনেকে গাঁ ঢাকা দেন, আবার কেউ কেউ বিদেশে পালিয়ে যান। সে সময় সকল বাধা-বিপত্তি পেছনে ফেলে জীবন বাজী রেখে প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবীতে সংগ্রামী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী আজো পদ হারা এক সৈনিক। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি নিজ উদ্যোগে মিরপুর সরকারী ইউনানী-আর্য়ুবেদিক মেডিকেল কলেজের সংগ্রামী সভাপতি হিসেবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে অনশনে অংশগ্রহন করেন। এই সাহসী যুবনেতা ১/১১ এর সময় আওয়ামী সংগঠনের সাথে স্বাধীনতা দেশজ চিকিৎসক পরিষদের পক্ষে অংশগ্রহন করে প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবীতে মিছিল মিটিং ও অনশন করেন। এই জনদরদী বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সংগঠিত গ্রেনেট হামলার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে। সেই বিভেষিকাময় হামলার চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়ালেও রাজনৈতিক জীবনে কোনো ভালো পদ-পদবী লাভ করতে পারেননি। তারপরও আওয়ামীলীগের প্রতিটি কর্মসূচীতে তার দৃশ্যমান অবস্থান অনেকটাই দৃঢ়। বলতে গেলে ছাত্রজীবন থেকে শুরু হওয়া ১৬ বছরের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নিবেদিত এই মানুষটি আজো অবহেলিত একমাত্র আঞ্চলিক প্রভাবশালী নেতাদের বদৈন্যতায়। অথচ তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক, স্বাধীনতা দেশজ চিকিৎসক পরিষদ (স্বাদেচীপ) এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক প্রচার সম্পাদক, মিরপুর সরকারী ইউনানী-আর্য়ুবেদিক মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শাখার সাবেক সভাপতি, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ সরকারী ইউনানী-আর্য়ুবেদিক কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার নারিকেলবাড়ি ছাত্র সংঘের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও স্বামী বিবেকান্দ সমাজকল্যাণ পরিষদের সাবেক সভাপতি হলেও কালের আর্বতে তিনি পদ বঞ্চিত এক লড়াকু সৈনিক। জীবনের মূল্যবান সময় পাড় করেছেন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে। শত বাধা-বিপত্তি পিছনে ফেলে আজো দৃঢ়তার সাথে আওয়ামীলীগের নিবেদিত কর্মী হিসেবে সকল কর্মকান্ডে সংক্রিয় রয়েছেন। এ বছরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তার উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, তিনি একমাত্র নিঃস্বার্থ, সৎ ও নিবেদিত কর্মী। নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে মূল্যবান সময় পাড় করেছেন নির্বাচনী কর্মকান্ডে। পুরো রাজধানী জুড়ে ঘুরে ফিরেছেন নৌকা প্রতীকে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে। ঢাকা কেন্দ্রীয় বড় বড় নেতাদের সাথে মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহনে সাধারণ মানুষ মনে করেছেন, তিনি বড় কোনো নেতা। আসলে তিনি বঞ্চিত নেতাদের একজন। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ পালনে নিজ ব্যবসায়ীক কাজকর্ম ত্যাগ করে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন, এটাই তার স্বার্থকতা। কোটালীপাড়ার সচেতন সাবেক নেতাদের মতে, নিঃস্বার্থ, সৎ, সাহসী ও ত্যাগী এই ছাত্রনেতা যেভাবে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন তাতে বহু আগেই ভালো কোনো পদে আসীন হওয়ার কথা। যারা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা আদায় করেছেন, তারাই এখন অন্য নেতা নির্বাচনে তৎপর। তারা বুঝতে পেরেছেন, এই নেতা কোটালীপাড়ার কোনো পদ পেলে আগামীর বড়নেতা হয়ে উঠবে এবং বিগত দিনের সুবিধাভোগী নেতাদের মুখোশ উম্মোচিত হবে। আঞ্চলিক সুবিধাভোগী ও নব্য আওয়ামী কিছু নেতার কারসাজিতে ত্যাগী নেতাদের পদ বঞ্চিত নিয়ে বির্তক চলছে। তবে এলাকার অসহায়, গরীব ও মেহনতি মানুষের প্রত্যাশা- ডা. এস.বি জয় (সঞ্জয়) যুবলীগের কোনো কার্যকারী পদ পেলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। কারণ নেতা হওয়ার পূর্বে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, মন্দির-গীর্জা, দাতব্য-চিকিৎসালয়, পাবলিক স্থাপনা ও সামাজিক অঙ্গ সংগঠনের উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। তারা বলছেন, বর্তমানে যুবলীগের যারা নেতৃত্বে আসছেন বা যারা আসবেন, তাদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা, সমাজসেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ডা. এস.বি জয় (সঞ্জয়) অন্যতম। এখানকার আঞ্চলিক সচেতন নেতাদের মতে, কোটালীপাড়ার নেতা নির্বাচনে জনগনের মতামতকে মূল্যায়ন করলে তিনি সবাইকে পেছনে ফেলে শীর্ষে অবস্থান করবেন। আর যদি নেতা দিয়ে নেতা নির্বাচন করা হয়, তাহলে ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীরা পদ পেয়ে আগের মতোই নিজেদের স্বার্থে ব্যস্ত থাকবেন। জনস্বার্থের নেতা বানাতে হলে তাকেই পদ দেয়া উচিত, যিনি গরীব অসহায় মানুষের দুঃখে-কষ্টে পাশে থাকবেন। আমরা চাই জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো নিঃস্বার্থক একজন নেতা। যিনি গত জাতীয় নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে। ইতিপূর্বে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন বা আগামীতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নব্য নেতাদের দলে ভীড় করিয়েছেন, তাদের দিয়ে এলাকার উন্নয়ন আশা করা যায় না। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরুনে তাকেই মর্যাদাপূর্ণ পদ দেওয়া হোক, যিনি নিঃস্বার্থভাবে ও সাহসীকতার সাথে আগেও ছিলেন, বর্তমানে আছেন এবং আগামীতে মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *