ভোলার উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি  : প্রধান উপদেষ্টার প্রতি স্মারকলিপি

Uncategorized গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বরিশাল বিশেষ প্রতিবেদন সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

মো: আতিকুর রহমান (ভোলা) :  ভোলা জেলার দীর্ঘদিনের অবহেলা, অবকাঠামোগত পশ্চাৎপদতা এবং বেকারত্ব নিরসনে দ্রুত রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামে এক গণজাগরণমূলক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ মে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (BDF) ও চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসীর দাবী আদায়ে সর্ব ঐক্য মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটি। কর্মসূচিতে চট্রগ্রামস্থ প্রায় ৩০ টি সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, নাগরিক সমাজ ও প্রবাসী ভোলাবাসীর বিপুল উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভোলা একসময়ে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় জেলা ছিল, যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, মৎস্য সম্পদ, কৃষি সম্ভাবনা ও পর্যটনের বিস্তৃত সুযোগ। অথচ আজও জেলাটির অনেক উপজেলায় গ্যাস সংযোগ নেই, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য নেই কোনো সরকারি মেডিকেল কলেজ কিংবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বক্তারা মনে করেন, ভোলার এই পিছিয়ে পড়ার পেছনে দীর্ঘদিনের অবহেলা এবং কার্যকর উন্নয়ন পরিকল্পনার অভাবই দায়ী।এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি বিস্তারিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়, যাতে ভোলার সার্বিক উন্নয়নের জন্য জরুরি ৮টি পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্মারকলিপিতে ভোলাকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি গ্যাস সংযোগ, সেতু নির্মাণ, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।ভোলাবাসী মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে ভোলার অন্তত ২২ লক্ষ বেকার জনগণের কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আর্থসামাজিক চেহারায় বড় পরিবর্তন আসবে।


বিজ্ঞাপন

গত ৫ মে চট্টগ্রামে বিডিএফ এর আয়োজনে বিডিএফ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লায়ন আবুল কাশেম এমজেএফ এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জহিরুল আলম এর সঞ্চালনায় এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় এই দাবিগুলোর যৌক্তিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভোলার উন্নয়ন শুধু ভোলাবাসীর দাবি নয়, এটি একটি জাতীয় প্রয়োজন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তবে ভবিষ্যতে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে এবং আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করবে।


বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ৮ মে ভোলা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সরকারি সভায় সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, “ভোলা-বরিশাল সেতু প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় এবং ২০২৬ সাল থেকে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০৩৩ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।” এই ঘোষণায় ভোলাবাসীর মাঝে আশার আলো জেগেছে, তবে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রশাসনিক অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার দাবিও উঠেছে।

ভোলার উন্নয়নে এমন সুসংগঠিত দাবি ও গণজাগরণ স্থানীয় জনগণের মধ্যে নতুন আশার সৃষ্টি করেছে। আয়োজকরা বিশ্বাস করেন, যথাযথ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নিলে ভোলা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *