বিশেষ প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে একাধিক মামলার আসামি বিএম ইউসুফ আলী এখনোও পলাতক রয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে, পপুলার লাইফের ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করায় দুদকের মামলায় বিএম ইউসুফ আলীসহ চারজন কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। বিএম ইউসুফ আলী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলন দমনে অস্ত্র সরবরাহকারী ও অন্যতম অর্থ যোগান দাতা।

তার নামে হত্যা, দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুন, দুস্কর্মে সহায়তা সহ হুকুম দানের অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন থানায়। বীমা মাফিয়া বিএম ইউসুফ আলী দেশের বীমা সেক্টরে একটি আতংকের নাম। বীমা আইন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ভঙ্গ করে একই সাথে দুইটি জীবন বীমা কোম্পানির শিরোমনি এই বিএম ইউসুফ আলী।

বীমা আইন-২০১০ এর ধারা ৭৫ লংঘন করায় তাকে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর পরিচালক পদ থেকে অপসারণে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, মর্মে সরকারী প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে রুল দিয়েছে হাইকোর্ট।

আওয়ামী লীগের আমলের দূর্ণীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তা বেনজির আহাম্মেদ ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের ছত্রছায়ায় একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সকল কাজে।
দেশে শেয়ার বাজার কেলেংকারীর অন্যতম মাষ্টার মাইন্ড মোস্তফা হেলাল কবিরের সহযোগিতায় দেশে-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বিএম ইউসুফ আলী।
পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর লক্ষ লক্ষ বীমা গ্রাহকদের আমানতের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন শরীয়তপুর জেলার প্রভাবশালী এই আওয়ামিলীগের দোসর। পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করায় দুদকের মামলায় বিএম ইউসুফ আলীসহ চারজন কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
একাধিক মামলার আসামী এই বিএম ইউসুফ আলী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাজধানীতে, নিয়মিত অফিস করছেন দিলকুশায় পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রধান কার্যালয়ে। বিএম ইউসুফ আলী ও তার পরিবার এর সদস্যরা জুলাই-আগষ্ট-২০২৪ এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সক্রীয় অস্ত্রধারী সদস্য হিসাবে ছাত্র হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং আন্দোলন দমনে প্রচুর অর্থ যোগান দেয়।
বিএম ইসুফ আলীর দুই ছেলের আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী হিসাবে সরাসরি অংশগ্রহনের চিত্র বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমান রয়েছে।
এবিষয়ে রাজনৈতিক খুন ও দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃস্টি, বিস্ফোরণ ঘটাইয়া খুন, দুস্কর্মে সহায়তা সহ হুকুম দানের অপরাধ সংক্রান্ত দুইটি মামলা চলমান আছে। (১) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরসরি জড়িত থাকার অপরাধে রাজনৈতিক খুন শিরোনামের শিরে মামলার আসামী বিএম ইউসুফ আলী গং।
ডিএমপি পল্টন থানার মামলা নং-২৬, তারিখ-১৬ মার্চ, ২০২৫, বাৎসরিক নম্বর-১৩৪। আসামী নং-৫০: বিএম ইউসুফ আলী (আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা)। আসামী নং-৬১: (বিএম ইউসুফ আলীর আপন ছোটভাই)-বিএম শওকত আলী (ফ্যাসিবাদের দোসর অস্ত্রদাতা ও অর্থ যোগানদাতা)।
আসামী নং-৬৮: (বিএম ইউসুফ আলীর বড় ছেলে)-মাহামুদুল হাসান ইমন (ফ্যাসিবাদের দোসর অস্ত্রদাতা ও অর্থ যোগানদাতা)। আসামী নং-৭১: নং-৭ (বিএম (বিএম ইউসুফ ইউসুফ আলীর আলীর ছোট ছেলে)-মেহেদি হাসান নাহিদ (ফ্যাসিবাদের দোসর অস্ত্রদাতা ও অর্থ যোগানদাতা)।
(২) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরসরি জড়িত থাকার অপরাধে দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃস্টি, বিস্ফোরণ ঘটাইয়া খুন, দুস্কর্মে সহায়তা সহ হুকুম দানের অপরাধ শিরোনামের মামলার আসামী বিএম ইউসুফ আলী ও তার আপন ভাই।
ডিএমপি মিরপুর মডেল থানার মামলা নং-৩৮, তারিখ-২০ এপ্রিল, ২০২৫, বাৎসরিক নম্বর-২০০। আসামী নং-১৮২: বিএম ইউসুফ আলী। আসামী নং-১৮৩: বিএম শওকত আলী। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে তারা এখনো গ্রেপ্তার না হয়ে, বিএম ইউসুফ আলী ও তার ভাই বিএম শওকত আলী পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর হেড অফিসে দিব্যি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জানা গেছে, তার দুই ছেলে পালিয়ে দেশ ছেড়েছে।