বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মানবেতর জীবন

এইমাত্র জাতীয়

আক্তারুজ্জামান, রংপুর : করোনার আগমন ও অর্থনীতির চাকা স্থবির। বৈদেশিক আয় প্রায় বন্ধ। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী বন্ধ। চারিদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে। জীবন হয়ে উঠছে দুর্বিসহ। যার যে টুকু জমানো বা সঞ্চিত ছিল, তাও প্রায় শেষ হবার মত। আয় অনুযায়ী প্রত্যেকটি মানুষের জীবন যাপন ও আলাদা। বিভিন্ন পেশাজীবি বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছেন। সরকারী চাকুরিজীবিরা (৩য় ও ৪র্থ শ্রেনির) তারাও সুযোগ সুবিধা পাবেন। বিভিন্ন এনজিও যারা কর্মরত তারাও পাবেন। কিন্তু বেসরকারী শিক্ষকদের আর্থিক সচ্ছলতা , সহযোগীতা কিংবা তাদের জীবন এই করোনার সময় কিভাবে চলবে, তা এদেশের বিবেকমান মানুষ একবারও ভেবে দেখেনি। অনেকে ভাবার প্রয়োজনীয়তা ও অনুভব করেনি।
একজন বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকের বেতন শুরু হয় ১২৫০০+ ১০০০+৫০০ = ১৪০০০- ১০%। থাকে কত? বি এড করলে পাবেন (১৬০০০+১০০০+৫০০) – ১০%। একজন সিনিয়র শিক্ষক পাবেন (২২০০০+১০০০+৫০০) – ১০%। একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক পাবেন (২৩০০০+১০০০+৫০০) – ১০%। গত দুই বছরে ৫% ইনক্রিমেন্ট লেগেছে, কিন্তু কর্তন ১০% হওয়াতে বেতন প্রায় আগের মত রয়েছে। এর উপর আছে সন্তানের লেখাপড়া, স্ট্যাটাস মেইনটেইন করা, সামাজিকতা ইত্যাদি। এই সব করতে গিয়ে তারা ব্যাংক, বিভিন্ন এনজিও ও সংস্থা হতে ঋন নিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আদেশ ও জারী করেছিন। এন জিও গুলো ঋন এর কিস্তির জন্য ততটা তৎপর নয়, কিন্তু ব্যাংক গুলো তাদের ঋনের কিস্তি ঠিকই কর্তন করছে। কর্তন করার পর একজন শিক্ষক যে পরিমান টাকা পান, সেই টাকা দিয়ে তার পক্ষে চলা সম্ভব নহে। তাছাড়া শিক্ষক গন দু চার প্রাইভেট পড়াতেন সরকারী নিয়ম মেনে, অথবা অনেকে বিভিন্ন ব্যবসা করতেন, এখন সব বন্ধ।
যে বেতন একজন বেসরকারী শিক্ষক পান, তা দিয়ে তার পক্ষে চলা সম্ভব নয়, তার পরেও তারা কষ্ট করে দেশের কান্ডারী হয়ে মহান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। একজন শিক্ষক তো একজন দিন মজুরের মত চলতে পারে না। তাই এব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সহ সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেন মানবিক ভাবে দেখে সেদিকে নজর রাখা দরকার।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন প্রনোদনা হোক আর রেশনিং হোক, এক্ষেত্রে বেসরকারী শিক্ষকদের ও অন্তভুক্ত করা উচিৎ।


বিজ্ঞাপন