শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবী

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকেদের মৌলিক অধিকার হিসেবে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিল্স), শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) নামের তিনটি সংগঠন। মঙ্গলবার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বল হয়, আজ জাতীয় পর্যায়ে পালিত হচ্ছে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস। জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি এই দিনটিকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত, আহত, শারীরিকভাবে অক্ষম ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শ্রমিকদের স্মরণে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক স্মরণ দিবস (ইন্টারন্যাশনাল কোমেমোরেশন ডে) হিসেবে।
দিবসটির মূল উদ্দেশ্য, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ উন্নয়ন ঘটিয়ে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে উদ্বুদ্ধ করা।
শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি সংকটের প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে ২০০৬ সালের বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন করে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো অনেকটাই যুগোপযোগী করা হয়। সেই সঙ্গে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার গুরুত্ব, স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা ও দায়িত্ব স্পষ্ট করে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
তারা আরও বলেন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নীতিমালা ২০১৩ এর নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এ দিবসটি পালন করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা আজও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হয়নি। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারির প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে জীবনযাত্রা। যার ভয়াবহতা আজ বাংলাদেশেও সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের মতো শ্রমঘন এলাকাগুলোতেই করোনায় আক্রান্তের হারও সবচেয়ে বেশি। সারাদেশে সাধারণ ছুটি লকডাউন চলাকালীন অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রভাব পড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সব শ্রেণী পেশার মানুষের জীবনে, তবে বিশেষভাবে অচল হয়ে পড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা, যাদের সঞ্চয় বলতে কিছুই নেই।
এমন সংকটময় পরিবেশে চিকিৎসাসেবা, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সিটি করপোরেশনের মতো জরুরি সেবা প্রদানকারী এবং নিরাপত্তার রক্ষায় নিয়োজিত পেশার সঙ্গে জড়িতদের পেশাগত দায়িত্বের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, জাতির এই ক্রান্তিকালে যাদের অবদান অনস্বীকার্য। সুতরাং এই আপদকালীন সময়ে সব শ্রমজীবী মানুষের বেতন, ভাতা এবং বোনাস নিশ্চতকরণ, বেতন না দেয়া কিংবা ছাঁটাই থেকে বিরত থাকা, সর্বোপরি চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কর্মস্থলে প্রতিটি শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা একান্ত অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।


বিজ্ঞাপন