সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত  মঞ্জুর আলম চৌধুরী  : রেলের কালো অধ্যায়ের নেপথ্য  মহা কুশীলব !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : বাংলাদেশ রেলের ইতিহাসে যখনই দুর্নীতি, অনিয়ম, চাটুকারীতা আর ভণ্ডামির কথা উঠবে, তখনই যার নাম সর্বোচ্চ ঘৃণাভরে স্মরন হবে  তিনি সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা খ্যাত  কুখ্যাত মঞ্জুর আলম চৌধুরী, সাবেক এডিজি (RS) বাংলাদেশ রেলওয়ে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার এক অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র অভিযোগের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন  গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আক আজকের দেশ ডটকম এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত হলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।


বিজ্ঞাপন

ডেমু ট্রেন দুর্নীতি আড়ালেও ভূয়া মেরামতের নামে হাজার কোটি টাকার কালো খেলা : ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা ২০ সেট ডেমু ট্রেনগুলো দুই বছরের মধ্যেই ভাঙ্গরিতে পরিনত হয়। অথচ, এই নষ্ট ডেমু মেরামতের নামে আবারও মঞ্জুর আলম চৌধুরী তার পছন্দের দুই ঠিকাদারকে দিয়ে ধাপে ধাপে নানা কৌশলে পরীক্ষামূলক মেরামতের নামে ন্যূনতম ১০০০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ক্রয় ও মেরামত কাজের ব্যায় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে নিজে পাঁচ শত কোটি টাকা।

ভূয়া মেরামতকৃত ডেমুগুলো একদিনের জন্যও সচল হয়নি।প্রকৃতপক্ষে, রক্ষণাবেক্ষণের নামে ছিলো বিশাল লুটপাটের দুর্নীতির জাল।  দুদক যদি ডেমু ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণের নথি গভীরভাবে খতিয়ে দেখে তাহলে উন্মোচিত হবে আরও মহাভয়ঙ্কর দুর্নীতির বিশাল সাম্রাজ্য।


বিজ্ঞাপন

কোরিয়ান হুন্দাই রোটেম থেকে নিম্নমানের লোকোমোটিভ কেনার প্রক্রিয়ায় সব অনিয়ম সামাধানের জন্য দালালী কমিশন খাওয়া  :  হুন্দাই রোটেমের নিম্নমানের ইঞ্জিনের জন্য নিজ দ্বায়িত নিয়ে মন্ত্রীকে ভাঙ্গিয়ে মাঠে নামিয়ে নিম্ন মানের ইঞ্জিনগুলো খোদ পিডিকে পরিবর্তন করে কমিশনিং ও রিসিভ করাতে বাধ্য করান মঞ্জু।  সরবরাহকারীর সাথে বসে ক্রয় কাজের কমিশনের বাইরেও অনিয়ম কে নিয়মে মানিয়ে দেয়ার চুক্তিতে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে করেন গোপন রফাদফা। প্রি-শিপমেন্ট ডকুমেন্টস টেম্পারিং করে ইঞ্জিন গ্রহণে চাপ সৃষ্টি। সরবরাহকারীর পক্ষে নিজের হাতে নকল কাগজ তৈরি করে দ্বায়িত্বের বাইরে গিয়েও অমানুষিক চাপ সৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ করেন তৎকালীন পিডির কাজে। মন্ত্রীর ক্ষমতা সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে প্রকল্প পরিচালককে ন্যায় সঙ্গত সিদ্ধান্ত নিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং তাৎক্ষনাৎ বদলী করে দেন।


বিজ্ঞাপন

ইতিহাসের সর্বোচ্চ ঘুষখোর, ভয়ংঙ্কর চাঁদাবাজ ও মহা-পদলোভী :  অবসরে যাওয়ার আগে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১৩ কোটি টাকা চাঁদা বা অগ্রিষ ঘুষ সংগ্রহ করেন তিনি। এই টাকা দিয়ে তৎকালীন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের মাধ্যমে নিয়ম নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর ডিও লেটার ইস্যু করিয়ে জোর করে নিজেকে ডিজি বানাতে সর্বোচ্চ বেপোরোয়া হন, যা রেলের ইতিহাসে সবচেয়ে ঐতিহাসিক লজ্জাজনক ঘটনা।

চাটুকারিতা, ভুয়া দেশপ্রেম আর শত কোটির অপচয়  : বঙ্গবন্ধু ভ্রামমান্য রেল জাদুঘরের পরিদর্শনের নামে কয়েকশো কোটি টাকার অপচয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণে দুইটি ক্যারেজ নষ্ট করে সস্তা জনপ্রিয়তা হাসিলের চেষ্টা। অবৈধ আয়ের টাকা দিয়ে নিজের লেখা বঙ্গবল্টুকে নিয়ে “মহানায়ক” নামক গান রচনা ও মিউজিক ভিডিও তৈরি করার অভিযোগ আছে।  পদলোভী এই প্রতারক মঞ্জু বিভিন্ন সময় সরবরাহকারীদের অফিসে সরাসরি নিজে গিয়ে শত শত কোটি টাকার ফাইল স্বাক্ষর করতেন।

মোহাম্মদপুর, পূর্বাচল, মিরপুর, রংপুর ও দেশের আনাচে কানাচে তার নামে বেনামে রয়েছে নূন্যতম হাজার কোটি টাকার সম্পদ। বর্তমানে আবার আমেরিকা প্রবাসী মেয়ে ও নাতি-নাতনির নামে হুন্ডির মাধ্যমে কিনে দিয়েছেন আলিশান প্যালেসের মত মিলিয়ন ডলারের প্রপার্টী, যেগুলো ধরা ছোয়ার বাহিরে।

মাদকাসক্ত ও অবৈধ নারীর সঙ্গে উচ্চবিলাসী জীবনযাপন :দ্বায়িত্বরত অবস্থায় তিনি রেল সরবরাহকারীর সাথে নিয়মিত ক্যাডেট কলেজ ক্লাবে, ঢাকা ক্লাবে ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সুইমিং পুল সাইডে মদ, নারী নিয়ে উন্মাদনা আর মদ্যপ হয়ে উন্মত্ত নৃত্যের ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। তবে আমরা কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ বা চরিত্রহানির কারণ হতে চাই না; তাই এই বিষয়ে সরাসরি নাম-চিহ্ন প্রকাশ করা থেকে আমরা বিরত রয়েছি।এগুলো প্রমাণ করে রেলের অর্থ শুধু দুর্নীতির জন্যই নয়, ভোগ-বিলাস আর চরিত্রহীনতায় উড়িয়ে দেওয়া হতো।

বর্তমান প্রজন্মকে রেখে গেছে দুর্নীতির মডেল : মঞ্জুর আলমের দেখানো পথে চলেই বর্তমান এডিজি (RS) ও একাধিক সিন্ডিকেটের সাথে পাঁচতারকা হোটেলে গভীর রাতে গোপন বৈঠক করে নতুন ষড়যন্ত্র আঁটছে। মঞ্জুর হাত ধরেই তৈরি হয়েছে দুর্নীতির একটি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি।

দুদকের প্রতি সাধারণ রেল যাত্রীদের পক্ষ থেকে তদন্ত দাবি  : শুধু কয়েকজন নামজাদা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নয়, মঞ্জুর আলম চৌধুরীর পুরো কর্মকালীন সব ক্রয়, মেরামত ও ফাইলের উপর পূর্ণাঙ্গ বিশেষ জোড়ালো তদন্ত প্রয়োজন। ডেমু দুর্নীতি থেকে শুরু করে লোকোমোটিভ, খুচরা যন্ত্রাংশ ও রেল জাদুঘরের নামে অপচয়ের প্রতিটি খাতা উন্মুক্ত করা হোক জনসম্মুখে জনস্বার্থে।

যারা রেলকে ভেঙে খেয়ে ফেলেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোই হবে দেশের জনগণের একমাত্র প্রত্যাশা। মঞ্জুর আলম চৌধুরী শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি রেলের ইতিহাসে দুর্নীতির প্রতীক। যতদিন না তাকে ও তার অনুসারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রতিটি চাকা ঘুরবে রক্ত-ঘামে, দুর্নীতি আর অসহায় যাত্রীদের কান্নার বোঝা নিয়ে। ভবিষ্যতে তার বিশেষ বিশেষ দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহন, অসামাজিক অনৈতিক, মাদকাসক্তি সহ সকল কিছুর তথ্যপ্রমানের ভিত্তিতে আজকের দেশ ডটকম এ  প্রকাশিত হবে আরও একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *