নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুর পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকা যেন রূপ নিয়েছে দখলবাজ আলমগীরের একক আধিপত্যের মঞ্চে। স্থানীয় ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী এবং রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ অনুযায়ী, আলমগীর শুধু আদালতের আদেশ অমান্য করে নালিশী জমিতে অবৈধ নির্মাণকাজই চালাচ্ছেন না, বরং ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা ও নির্যাতনেরও অন্যতম অর্থ যোগানদাতা ও নেপথ্য সমন্বয়ক ছিলেন।

গত বছর ৫ আগস্ট ঢাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত নৃশংস হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় সরাসরি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওইদিন আলমগীর ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী বাহিনীকে সমন্বয় করেন এবং হামলার খরচ বহন করেন। হামলায় বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয় এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। স্থানীয় সূত্র মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠ হয়ে তাদের ছত্রছায়ায় থেকে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রায়ই নিরুৎসাহিত হয়।
মিরপুর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার নালিশী জমি দখলকে ঘিরে তার সাম্প্রতিক কার্যক্রম আদালত অবমাননার এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগী আলহাজ্ব মোঃ মুকুল আমিন (পিতা- আলহাজ্ব আব্দুল মালেক, মাতা- নেওয়াজ বিবি, ঠিকানা: প্লট-৫৯৩, পশ্চিম শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬) জানান, জমিটি নিয়ে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-৫২২/২০২৪ বর্তমানে বদলীক্রমে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-১২০/২০২৫ হিসেবে যুগ্ম জেলা জজ ৬ষ্ঠ আদালতে বিচারাধীন। গত ১৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে আদালত উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে জমি সংক্রান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। কিন্তু ওমরাহ থেকে দেশে ফিরে এসে তিনি দেখেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে আলমগীর পাইলিং কাজ চালাচ্ছেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, “আলমগীর আমার জমি দখল করেছে। আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করে পাইলিং করছে। শুধু আমার ক্ষতিই করছে না, দেশের ছাত্র সমাজের রক্ত দিয়ে খেলছে।” আইনজ্ঞদের মতে, আদালতের স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করে এমন কর্মকাণ্ড সরাসরি আদালত অবমাননার শামিল।

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা আলমগীরের মতো দখলবাজরা জমি দখল ও অবৈধ ব্যবসা থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করে তা ছাত্র দমন, হামলা ও হত্যার মতো ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে শুধু আইনের শাসনই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে না, বরং সমাজে অস্থিরতা ও আতঙ্ক বাড়ছে।
এখন দেখার বিষয়, মিরপুর মডেল থানা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আলমগীরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এসব ভয়াবহ অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ছাত্র সমাজের ওপর হামলার মতো ঘটনা আবারও ঘটতে পারে এবং সামগ্রিকভাবে সমাজে অস্থিতিশীলতা আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।