নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রকল্পে একটি দৃষ্টান্তমূলক দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ বুলবুল আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে তার চাকরি স্থায়ী করার অধিকার আদায় করতে পারছেন না।

অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকল্পের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করে ৩১৫৭ জনের চাকরি স্থায়ী করেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ২০১১ সালে প্রায় এক হাজার উপসহকারী প্রকৌশলীর মধ্যে ৬০৯ জনকে প্রতি জনকে ৬–৭ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে রাজস্ব খাতে নিয়মিত করা হয়।
মোহাম্মদ বুলবুল আহমেদ, যিনি আরডিপি-২৬ প্রকল্পের এলজিইডি জেলা সিরাজগঞ্জে উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন, হাইকোর্টে রিট ও কনটেমপ্ট পিটিশন দায়ের করে ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল তার চাকরি স্থায়ী করার আদেশ পান। এর পরেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এলজিইডি তার রায় বাস্তবায়ন করে না।

পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় ৩ জুলাই ২০১৭ তারিখে তাকে রাজস্ব খাতে নিয়মিত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রশাসন শাখার চাহিদা পূরণ না হওয়ায় রায় এখনও কার্যকর হয়নি।

বুলবুল আহমেদের অভিযোগ, তার সিনিয়রত্ব থাকা সত্ত্বেও জুনিয়রদের মধ্যে ৬০৯ জনকে রাজস্ব খাতে নিয়মিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ২৫ জনকে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “হাইকোর্ট এবং পিএসসি সবখান থেকেও আমার চাকরি স্থায়ী করার আদেশ আছে। তবুও এলজিইডি আমাকে ঘুরাচ্ছে। প্রশাসন শাখার চাহিদা পূরণে আমার ফাইল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে না, অথচ মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে অনেকের চাকরি স্থায়ী ও প্রমোশন হয়েছে। আমি এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।”
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী খলিলুর রহমান ২৭ জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে তাদের চাকরি স্থায়ী করেছিলেন। বুলবুল আহমেদের নতুন আবেদনের পর মন্ত্রণালয় আবার এলজিইডিকে চিঠি প্রেরণ করেছে, এবং ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এলজিইডি নতুন করে চিঠিপত্র চালু করেছে।
বুলবুল আহমেদের এই দীর্ঘদিনের লড়াইকে রাস্ট্রের সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থায় ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির কু-প্রভাবকে সামনে এনেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে যে, সিনিয়র ও যোগ্য কর্মকর্তার ক্ষেত্রে এখনও নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতি ও নিয়মিতকরণে কার্যকর কোন প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।