নিজস্ব প্রতিবেদক (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগের একটি ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প ঘিরে বেরিয়ে এসেছে ভয়াবহ দুর্নীতির কাহিনি। অভিযোগ উঠেছে—দরপত্রে গোপন তথ্য ফাঁস করে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে ৩০ লাখ টাকার মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন হয়েছে। এই ঘুষের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ আবু হানিফ।

সূত্র জানায়, রাঙামাটি তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়ায় এই অনিয়ম সংঘটিত হয়। প্রকল্পের রেট সিডিউল গোপনে ফাঁস করে দেওয়া হয় ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (NATIONAL DEVELOPMENT ENGINEERS LTD) নামের একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। বিনিময়ে ৩০ লাখ টাকার ঘুষ নেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হানিফ—এমনই অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মী চাকমা। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা যখন শর্মী চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তিনি দায় এড়িয়ে বলেন, “এই বিষয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হানিফের সাথেই কথা বলতে হবে।”

জানা গেছে, উক্ত প্রকল্পের জন্য মোট পাঁচটি দরপত্র জমা পড়েছে। কিন্তু ‘অদৃশ্য প্রভাব ও গোপন সমঝোতা’র মাধ্যমে কাজটি পেতে যাচ্ছে NATIONAL DEVELOPMENT ENGINEERS LTD.। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ঠিকাদাররা বলছেন, “দরপত্রে কারসাজি করে নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে—এটি গণপূর্তের স্বচ্ছতা ও সততার প্রতি সরাসরি আঘাত।”

তারা দাবি করেছেন—এই টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করা হোক। একই সঙ্গে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের—অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ আবু হানিফ ও নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মী চাকমা—কে অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও তদন্তের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মহল।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ আবু হানিফের বক্তব্য জানতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ক্ষুব্ধ ঠিকাদার ও প্রকৌশল মহল বলছে—“চট্টগ্রাম গণপূর্তে দুর্নীতির এমন প্রকাশ্য রূপ এখনই রোধ না করলে ভবিষ্যতে কোনো কাজই নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে না।”
তারা বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।