একদিনে সুস্থ ৪২সহস্রাধিক

আন্তর্জাতিক এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন স্বাস্থ্য

মৃতের সংখ্যা ২১৪
আক্রান্ত ১৩,৭৭০

 

মহসীন আহমেদ স্বপন : বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। সুস্থতার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। গত একদিনে বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪২ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বব্যাপী করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে করোনার লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার। শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন। যুক্তরাষ্ট্রে সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৬০৩ জন, স্পেনে এক লাখ ৬৮ হাজার ৪০৮ জন, ইতালিতে ৯৯ হাজার ২৩ জন, ফ্রান্সে ৫৫ হাজার ৭৮২ জন। ইরানে সুস্থ হয়েছেন ৮৩ হাজার ৮৩৭ জন। তুরস্কে সুস্থ হয়েছেন ৮৬ হাজার ৩৯৬ জন।
বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থতার হারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে জার্মানি। দেশটিতে অবিশ্বাস্যভাবে আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৪১ হাজার ৭০০ জন। শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার ২১৬ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ১২ হাজার ৮৪১ জন। অপরদিকে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৪-এ। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৩৬ জন। ফলে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৭৭০।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি ৩৫টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ২৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় পাঁচ হাজার ৪৬৫টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ১৬ হাজার ৯১৯টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৭০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও আটজন। এদের সবাই পুরুষ। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১৪-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৩১৩ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৪১৪ জন।
গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭০৯ জন। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বাড়লেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে।
বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন গোটা বিশ্বই করোনাভাইরাসের কবলে। মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া ৪০ লাখ। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পৌন তিন লাখ। তবে প্রায় ১৪ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে ছুটি। বন্ধ বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে।
ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই প্রথমে লকডাউন ঘোষণা করেছিল। তবে এখন বিভিন্ন দেশে সেই লকডাউনই শিথিলের ঘোষণা আসছে। তবে হু বারবার হুঁশিয়ার করে বলছে, যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে লকডাউন তোলার সিদ্ধান্ত মোটেই ঠিক হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতদিন এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে না আসবে ততোদিন এর লাগাম টেনে ধরা কঠিন হবে। এজন্য আপাতত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারও নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমনকি এই নির্দেশ অমান্যকারীদের শাস্তিও দেয়া হচ্ছে। তবে এরপরও অকারণে রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সবশেষ ঈদ উপলক্ষে শপিং মল ও মসজিদ খুলে দেয়ার ঘোষণা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এসব জায়গায় অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি মানতে হবে সুরক্ষা ব্যবস্থা।


বিজ্ঞাপন