দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ৫ নং রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৯৩ জন ভোক্তার সংখ্যা আছে। সেই তালিকায় থাকা এক মৃত ব্যক্তিও দেড় বছর যাবৎ চাল উত্তোলন করে আসছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে গত ০৩/০৫/২০২০ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত আদেশে ৫নং রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নে বর্তমানে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির যে তালিকা আছে সেটা যাচাই বাছাই করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং উপজেলা খাদ্য গুদামের সাব ইন্সপেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জানা যায়, ২০১৬ সালে সারাদেশের ন্যায় দৌলতপুর উপজেলার ৫নং রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নেও খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির তালিকা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে তৈরী করা হয়। এবং ওই তালিকা অনুযায়ী বছরে ৫ বার ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল ১৯৩ জন পরিবারের মধ্যে দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যায় যে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে অনেকেই আছে এ পর্যন্ত এক থেকে দুইবার চাল উত্তোলন করেছেন। এমনকি ক্রমিক নম্বর ২০ নবীর উদ্দিন, পিতা মৃত দানেশ দফাদার দেড় বছর পূর্বে মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু তার নামের চাল গত ১৬/০৪/২০২০ ইং তারিখেও উত্তোলন করা হয়েছে। আরও জানা যায়, ক্রমিক নম্বর ৫৫ সোলাইমান মন্ডল, পিতা ইউনুস আলী নিজে এ পর্যন্ত মাত্র দুইবার চাল উত্তোলন করেছেন। কিন্তু প্রতিবার চাল উত্তোলন করা সিটে তার চাল উত্তোলন দেখানো হয়েছে। এছাড়াও ৬৮ ক্রমিকের টগরজান, স্বামী রবিউল ইসলাম এবং ৭০ ক্রমিকের রবিউল ইসলাম, পিতা ফজলুর রহমান উভয়ে স্বামী স্ত্রী হওয়া স্বত্বেও তাদের নাম একই তালিকায় পাওয়া গেছে। ক্রমিক নম্বর ১৮ সাজেদা খাতুন, স্বামী তুজাম, ক্রমিক নম্বর ৩০ টগরজান খাতুন, স্বামী আনারুল, ক্রমিক নম্বর ৪৪ হামেদ শেখ, পিতা করিম শেখ, ক্রমিক নম্বর ৫৬ ইস্তাহার আলী, পিতা আরজান সর্দার এই ৪ জনের খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির তালিকায় নাম থাকা সত্বেও তাদের নামে ভিজিডি কার্ড আছে বলে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। তাছাড়া আর্থিক অবস্থা ভালো এমন লোকদের নামেও ওই কর্মসুচির তালিকায় নাম রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এব্যাপারে রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর ডিলার মো. মাসুদুর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ মৃত্যু বরণ করলে কিংবা অন্য কোন তালিকায় একই ব্যাক্তির নাম থাকলে সেটা দেখার দায়িত্ব ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের। কারণ তিনিই এই তালিকা তৈরী করে আমাদের দিয়েছেন। আমার দায়িত্ব শুধু মাত্র সরকারী চাল ডিও করে এনে কার্ডধারীদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া।
এ ব্যাপারে ৫ নং রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডলের কাছে জানার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে কিনা এই মুহুর্তে বলতে পারছিনা। যদি তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তবে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
