চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকায় সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর পিতা ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপির দাদা হোসেন আহমদ চৌধুরীর নামকরণে হোসেন আহমদ চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন স্কুল এন্ড কলেজসহ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫টি স্কুলে শিক্ষক এমপিও করণ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজের ক্ষমতার প্রভাবে প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক এসএম এহসান উদ্দীনকে বঞ্চিত করেছে।
এমপিও বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারিরা বিষয়টি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া, চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দীন, শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক দেবব্রত দাশসহ শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের বিষয়টি জানানোর পরও কোন সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, নগরীর ষোলশহর হোসেন আহমদ চৌধুরী স্কুল এন্ড কলেজের নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস এম এহসান উদ্দীনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারিকে ষড়যন্ত্র করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেহেনা খানম ও সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়ার বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া চাক্তাই জুলেখা আমিনুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী খাইরুল আনোয়ারসহ ১৩ জন শিক্ষক কর্মচারির মধ্যে অধিকাংশ ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় এমপিওভুক্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী খাইরুল আনোয়ার জানান, কর্পোরেশন যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে সেভাবে কাগজ পত্র জমা দিয়েছে তবে জাল জালিয়তির বিষয়ে কর্পোরেশনের শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান। এছাড়াও লালখানবাজার শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কর্ণফুলীর খোয়াজনগর এলাকার আইুয়ুব বিবি সিটি কর্পোরেশন স্কুল এন্ড কলেজ, বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হোসেন আহমদ চৌধুরী স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেহেনা আকতার খানম নিজকে সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের ঘনিষ্ট লোক পরিচয় দিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়ার নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা যাবে না বলে হুংকার দেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এমপিও বঞ্চিত শিক্ষকেরা জানান শিক্ষা উপমন্ত্রীর দাদার নামে স্কুলটি হওয়ায় উনাকে হেয় করতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেহেনা খানম ও কর্পোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা এমন কাজ করেছে।
এ বিষয়ে হোসেন আহমদ চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন স্কুল এন্ড কলেজের বদলীকৃত প্রধান শিক্ষক এস.এম এহসান উদ্দীন জানান, আমি উক্ত স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষকতায় রয়েছি, স্কুল এমপিওভুক্ত হলেও আমাকে ষড়যন্ত্র করে এমপিওভুক্ত হতে দেয়নি, কর্পোরেশনের শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বরতরা এবং স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে স্কুলের শিক্ষক কর্মচারিরা। বিষয়টি আমরা মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়কেও আমরা অভিহিত করেছি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কথায় শিক্ষকদের কথায় কথায় সাবেক মেয়রের ঘনিষ্ট লোক বলে সবাইকে ভয় দেখান। এ বিষয়ে হোসেন আহমদ চৌধুরী স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেহেনা আকতার খানম বলেন, আমার স্কুলে যারা কর্মরত রয়েছে তাদেরকে আমি এমপিওভুক্ত করার জন্য নাম কর্পোরেশনে পাঠিয়েছি, আমার প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও বর্তমানে কর্মরত নেই তাদের বিষয়ে আমি দায়িত্ব নেয়ার কোন বিধান নেই বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বিধি মত সব করেছেন বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জসিম উদ্দীন বলেন, শিক্ষক এমপিওভুক্ত করনে কোন ধরণের অনিয়ম হয়ে থাকলে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই, সিটি কর্পোরেশন যেভাবে আমাদের কাছে দিয়েছে সেভাবে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়ার বক্তব্য জানার জন্য মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার অফিসে ও মোবাইলেও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক দেবব্রত দাশ বলেন, যদি কোন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায় সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।