দালালরাই হর্তাকর্তা

অপরাধ আইন ও আদালত

না’গঞ্জ পাসপোর্ট অফিস

 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দালাল মুক্ত হচ্ছেনা। শক্তিশালী একটি দালাল চক্র নিয়ন্ত্রন করছে পাসপোর্ট অফিস। বনে গেছে হর্তাকর্তা। পাসপোর্টধারীদের জিম্মি করে অর্থ আদায় ও প্রতারণা করছে দালাল চক্র। র‌্যাব ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে এসব দালালদের গ্রেপ্তার করলেও তাদের দাপট কমছেনা। তারা নিজেরাই ভুয়া সিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে পাসপোর্ট বানিয়ে লোকজনের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে।
জানা গেছে, পুলিশ ভ্যারিফিকিশন ছাড়াই সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দালালরা বিভিন্ন অপারাধী ও মায়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের নাগরিক বানিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট বানিয়ে দিচ্ছে। র‌্যাবের তদন্তে এমন সত্যতা প্রকাশ পাওয়ার পর কয়েকদফা অভিযান চালিয়ে অসংখ্য দালালকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তখন পাসপোর্ট অফিসটি দালাল মুক্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই আবার নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নেয় দালালরা। শুরু করে বেপরোয়া পাসপোর্ট বাণিজ্য।
এ অফিসে কর্মকর্তার চেয়ে দালালদের দাপট বেশি। দালালদের মাধ্যমে কর্মকর্তারা পাসপোর্ট করতে আসা লোকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ঘুষ না দিলে নানা হয়রানীর শিকার হতে হয়। তাই এ অফিসে দালালদের কদর আকাশ ছোঁয়া। এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার পাসপোর্ট অফিসের সামনে বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে ভূয়া সিল, কম্পিউটার, নগদ অর্থসহ দালাল চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি পাসপোর্ট, ৭৭ হাজার টাকা, ২টি সিল, ২টি ল্যাপটপ, ২ টি মনিটর ও প্রিন্টার। আটকরা হলো-আল আমিন, মাসুদুর রহমান, আনিছুর জাামান, মিলন মিয়া, রিয়াদ হোসেন, মেহেদি হাসান ও আফতাউল ইসলাম। তারা একই জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এর আগেও র‌্যাব-১১ বাহিনীর সদস্যরা ওই পাসপোর্ট অফিসে দুইবার অভিযান চালিয়ে পাসপোর্ট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামসহ একাধিক দালালকে গ্রেপ্তার করে। তার পরও দালালদের উপদ্রোপ কমছে না।
অভিযোগ জানা গেছে, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ঘুষবাণিজ্য আর হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে লোকজন দালাল নির্ভর হচ্ছে। এসব দালালদের সাথে কর্মকর্তাদের রয়েছে গোপন সখ্যতা। দালালদের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে সহজেই দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে লোকজন।
অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বলেন, দালালদের সাথে কর্মকর্তাদের কোন যোগসূত্র নেই। লোকজন সরাসরি অফিসে না এসে বাহিরে দালাল ধরে প্রতারিত হচ্ছে। তারা দালালদের কোন ধরণের আশ্রয় প্রশ্রয় দেননা বলে মন্তব্য করেন।


বিজ্ঞাপন