নিজস্ব প্রতিবেদক : অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম প্রকল্পের উদ্যোগে অনলাইন প্ল্যাটফরম ‘উত্তরণ’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম প্রকল্পের উদ্যোগে অনলাইন প্ল্যাটফরম ‘উত্তরণ’ এর উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রশাসন ফরিদা পারভীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বর্তমানে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামে এই নতুন অনলাইন প্ল্যাটফরম তৈরি অবশ্যই একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে মুজিববর্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যক্রম অধিকতর সুসংহত করা সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৫ সালে বেইজিং ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও ডেনমার্ক সরকারের যৌথ উদ্যোগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০০০ সাল হতে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। এ প্রকল্পের সহযোগী হিসেবে ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তথা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের সাথে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা কমানোর পাশাপশি সেবা কার্যক্রম জোরদার করা। এই প্রকল্পের আওতায় ১৩টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল, ঢাকায় ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার (ন্যাশনাল টোল ফ্রি হেল্পলাইন ১০৯), জয় মোবাইল অ্যাপ ও ন্যাশনাল সেন্টার অন জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের মনোসামাজিক কাউন্সেলিং প্রদানের জন্য কক্সবাজারের উখিয়ায় ১১টি রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০৩০ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় ‘ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদফতর’ প্রতিষ্ঠার কাজ চলমান আছে।