নিজস্ব সংবাদদাতা : সনাতন ধর্মাবলম্বীর সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রতিবেশি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বেশীর ভাগ মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি । যার কারনে উন্মাদনার শেষ থাকেনা।কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে, এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্গা পুজা বাংলাদেশে হয়। হ্যাঁ, বাংলাদেশের বাগেরহাটের শিকদার বাড়ির দুর্গা পুজা এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্গা পুজা হিসাবে স্বীকৃত। তবে এবার সেই শিকদার বাড়ির দূর্গা মন্দিরে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে পূজা উর্যাপিত হচ্ছে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে সিমিত পরিসরে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবার দুর্গা পূজাকে ঘিরে বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর শিকদার বাড়িতে জমকালো চোখ ধাঁধানো আয়োজন নেই,তবে কড়া স্বাস্থ্য সচেতনতার মধ্যে দিয়ে এবার পূজা উদযাপিত হচ্ছে সিমিত পরিসরে। এবার মূল মন্ডপে শুধু প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে তাছাড়া আর কোন আয়োজন কারা হয়নি। করা হয়নি আলোক সজ্জা, মন্দির কর্তৃপক্ষ বসতে দেয়নি কোন দোকানপাট, জেলা পুলিশের পক্ষথেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থ। সীমিত পরিসরে দর্শনার্থীদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও কঠোর ভাবে নজরদারীতে রয়েছে মাস্ক ও সামাজিক দূরাত্ব বজায় রাখার বিষয়টি।
সূত্রে জানা গেছে ২০১০সাল থেকে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে বাগেরহাটের শিকদার বাড়িতে এশিয়ার বৃহত্তম দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। লিটন শিকদার নামে একজন শিল্পপতি ও সমাজসেবক এই পূজার আয়োজন করে আসছেন। গত বছরও সেখানে পূজা মন্ডপে ছিল ৮০১টি প্রতিমা গত বছরের আগের বছর সেখানে ছিল ৭০১টি প্রতিমা তার আগের বছর ছিল ৬৫১টি। যা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রতিমার দুর্গা পূজার মন্ডপ বলে দাবি করেন আয়োজক কমিটি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্গা পুজা; বাগেরহাটের শিকদার বাড়ির দুর্গা পূজা ঐতিহাসিক আয়োজন এবং জাক-জমকপূর্ণ ভাবে পুজা আর্চনা হয়ে থাকে শিকদার বাড়ির এই শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরে। গত ৯টি বছর গুলোতেও এই আয়োজন এবং শ্রেষ্ঠত্বের অবস্থান বজায় রেখেছিল। গত বছর এখানে ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ ও মহাভারতের চার যুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছিল। গত বছর এখানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল, পুকুরের মাঝে শ্রী কৃষ্ণের অষ্টম সখীকে নিয়ে নৌকা বিলাশ। তাছাড়া প্রতিমার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সৃষ্টি রহস্য।
এই পুজায় শিকদার পরিবার তাদের হৃদয়ের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে সমাজসেবা সহ নানান উন্নয়ন কর্মকান্ড করে যুগযুগ ধরে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। এই শ্রেষ্টত্বের অবস্থান সৃষ্টির প্রতিযোগীতা শুরু করেছিলেন স্বর্গীয় ডাঃ দুলাল কৃষ্ণ শিকদার এবং তার স্ত্রী রমা শিকদার এর অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভগবানের প্রতি বিশ^স্থতা এবং ভালবাসার তাগিদে। তবে এবার করোনার কারনে সর্বাধিক সংখ্যক প্রতিমা তৈরী ও বৃহৎ পরিসরে দূর্গা পূজার আয়োজন না করলেও ইতি মধ্যে স্বর্গীয় ডাঃ দুলাল কৃষ্ণ শিকদারের পুত্র শিল্পপতি লিটন শিকদার করোনকালীন সময়ে খানপুর ইউনিয়নের ১হাজার দুঃস্থ্য ও কর্মহীন পরিবারের মধ্যে খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরন করেছেন তাছাড়া দূর্গা পুজা উপলক্ষে জেলা পুজা উযাপন পরিষদের মাধ্যমে অসহায়দের মাঝে বস্ত্র বিতরন এবং আলোকিত মানুষ গড়ার জন্য তিনি মানব সেবা করে যাচ্ছেন। যা একটি অন্যন্য দৃষ্টান্ত।
এব্যাপারে শিকদার বাড়ি দূর্গা পূজার আয়োজক শিল্পপতি লিটন শিকদার এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারী বিধিনিষেধ মেনে আমরা সিমিত পরিসরে পুজা উযাপন করছি, তবে আগামী বছর পরিস্থিতির উন্নতি হলে পূর্বের ন্যায় পুজার আয়োজন করা হবে।