এএসপি হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ১০ জন রিমান্ডে

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর আদাবর এলাকার মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রি এন্ড ডি-এডিকশন হসপিটালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুল করিম (৩৫) হত্যার ঘটনায় ১০জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আরিফ মাহমুদ জয় (৩৫), মার্কেটিং ম্যানেজার, রেদোয়ান সাব্বির (২৩), কো-অর্ডিনেটর, মো. মাসুদ (৩৭), কিচেন সেফ, জোবায়ের হোসেন (১৯), ওয়ার্ড বয়, মো. তানভীর হাসান (১৮), ফার্মাসিস্ট, তানিফ মোল্লা (২০), ওয়ার্ড বয়, সজীব চৌধুরী (২০), অসীম চন্দ্র পাল (২৪), মো. লিটন আহাম্মদ (১৮) ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ (৩৫)।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ হারুন অর রশিদ তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান
সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশিদ জানান, গত ৯ নভেম্বর বেলা আনুমানিক ১১.৩৫ টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আনিসুল করিমকে চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা আদাবরের মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রি এন্ড ডি-এডিকশন হসপিটালে নিয়ে যায়। তার কয়েক মিনিট পর উক্ত হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যায়। তখন তার বোন তার সাথে যেতে চাইলে আরিফ ও রেদোয়ান তাকে বাধা দেন কলাপসিবল গেট আটকে দেয়। এরপর আরিফ নিচে এসে তার বোনকে উপরে যাওয়ার জন্য বলে। তার বোনসহ পরিবারের লোকজন উপরে গিয়ে মোঃ আনিসুল করিমকে একটি রুমের ফ্লোরে নিস্তেজ অবস্থায় শোয়া দেখতে পান। এসময় তার পরিবারের সদস্যরা একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে মোঃ আনিসুল করিমকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট, শ্যামলীতে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্তে সোমবার রাতে তার বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা দায়েরের পর আদাবর থানা পুলিশ উক্ত হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পায়, বেলা অনুমান ১১ টা ৪৫ মিনিটের সময় গ্রেফতারকৃতরা মোঃ আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে মারতে মারতে ঢুকায়। তাকে উক্ত রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে ৩ থেকে ৪ জন হাটু দিয়ে পিঠের উপর চেপে বসে। আর কয়েকজন পিঠ মোড়া করে ওড়না দিয়ে তার দুই হাত বাঁধে। আবার কয়েক জন অভিযুক্ত কনুই দিয়ে ঘাড়ের পিছনে ও মাথায় আঘাত করে। ফলে মোঃ আনিসুল করিম বেলা অনুমান ১২ টার দিকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরিকল্পিতভাবে গ্রেফতারকৃতরা মারপিট করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ডিসি তেজগাঁও বলেন, হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তাদেও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এটা একটা ভুঁইফোড় হাসপাতাল। তারা অবৈধভাবে মানসিক রোগীর চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছিল। হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। হাসপাতালটিতে কয়েকজন রোগী আছেন। তাঁরা চলে গেলে হাসপাতালটি বন্ধ করে করে দেওয়া হবে।
হারুন অর রশিদ আরো বলেন, আদাবর থানা পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩১ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার সদস্য আনিসুল করিম ব্যাচে ১ম স্থান অধিকার করেন। অত্যন্ত মধাবী এই কর্মকর্তা কর্মজীবনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও সর্বশেষ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন