দুদক এনফোর্সমেন্টের অভিযান

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য অসচ্ছল ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ১১-১১-২০২০ তারিখে একই সাথে দুদকের দুই জেলা কার্যালয় হতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ও নড়াইল জেলা কার্যালয়ে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ হতে অভিযানকালে রাজধানীর টিম অভিযোগ সংক্রান্ত ২০১৭-১৮ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের তথ্য সংগ্রহ করে। সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী প্রদানকৃত ভাতায় নামের অনেক অনিয়ম পাওয়া যায়। একই নাম একাধিক তালিকায় রয়েছে এমন অনিয়ম দেখতে পায় দুদক টিম। এছাড়াও একই অর্থ বছরে একাধিকবার ভাতা প্রদান করা হয়েছে এমন প্রমাণও পাওয়া যায়।


বিজ্ঞাপন

একই অভিযোগে যশোর জেলা কার্যালয় হতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নড়াইল কার্যালয়ে অপর একটি অভিযান পরিচালিত হয়। ‌ যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবালের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান ২টিতে অভিযোগ সমূহের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় টিম বিস্তারিত অনুসন্ধানের সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।

এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, নাটোর এর নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সড়ক উন্নয়ন কাজের বাজেয়াপ্ত হওয়া টেন্ডার সিকিউরিটির অর্থ আত্মসাৎ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ, নাটোর–এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কর্মচারীদের কোয়ার্টার সংস্কার দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ এবং সাব-রেজিস্ট্রার নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে অনিয়মের মাধ্যমে দলিল সম্পাদনের অভিযোগে আজ ১২-১১-২০২০ তারিখে যথাক্রমে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাজশাহী হতে ২টি এবং কুমিল্লা কার্যালয় হতে ০১টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

দুদক কর্তৃক মামলা দায়েরঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল-এর বিরুদ্ধে মোট ৭২ কোটি ৮৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ২ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক ২টি মামলা করেছে দুদক।

প্রথম মামলায় মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বরকত, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ফরিদপুর-কে আসামি করা হয়। মামলাটির অভিযোগে বলা হয়, আসামি কর্তৃক অবৈধ উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্থের দ্বারা ৪৪,৪৯,৬৮,৮৩২/- (চোয়াল্লিশ কোটি উনপঞ্চাশ লক্ষ আটষট্টি হাজার আটশত বত্রিশ) টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন এবং তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মোট ৩৬,৪০,৫৫,৬৫২/- (ছত্রিশ কোটি চল্লিশ লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার ছয়শত বায়ান্ন) টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উক্ত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্জিত অর্থের উৎস ও খাতের মিথ্যা বিবরণী দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

অপর মামলা মোঃ ইমতিয়াজ হাসান রুবেল , থানা-কোতয়ালী, জেলা-ফরিদপুর-কে আসামি করা হয়েছে। আসামি কর্তৃক অবৈধ উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্থের দ্বারা ২৮,৩৫,১০,১৭০/- (আটাশ কোটি পঁয়ত্রিশ লক্ষ দশ হাজার একশত সত্তর) টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন এবং তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মোট ১৭,৯০,০৩,১৪১/- (সতের কোটি নব্বই লক্ষ তিন হাজার একশত একচল্লিশ) টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উক্ত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্জিত অর্থের উৎস ও খাতের মিথ্যা বিবরণী দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ আলী আকবর বাদী হয়ে দুদক সজেকা-১ এ মামালা ২টি দায়ের করেন।