বরগুনায় দেশের প্রথম নৌকা জাদুঘর

সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি : দেশের মধ্যে এই প্রথম বরগুনায় নৌকা জাদুঘর স্থাপন ও উদ্বোধন করা হয়েছে। এর নাম রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে এমন ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।


বিজ্ঞাপন

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন।


বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখে উকিল বার লাইব্রেরি সংলগ্ন পূর্ব পাশে পরিত্যক্ত পৌর পাঠাগারের ৭৮ শতাংশ জমিতে মাত্র ৮১ দিনে জাদুঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিলাহ’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মলিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও নৌকা জাদুঘর নির্মান কমিটির আহ্বায়ক জালাল উদ্দীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশ্রাফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক আলহাজ্ব মো. জাহাঙ্গীর কবীর প্রমুখ।

নৌকা জাদুঘরটির দৈর্ঘ্য ১৬৫ ফুট ও প্রস্থ ৩০ ফুট। একশ নৌকার মডেল নিয়ে নৌকা জাদুঘরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে আপাতত ৭৫টি নৌকা নিয়ে নৌকার আদলে তৈরি করা জাদুঘরটির দ্বার উন্মেচন করান এর স্বপ্নদ্রষ্টা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

 

নৌকা জাদুঘরটিতে স্থান পাবে দেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন অঞ্চলের কাঠ দিয়ে তৈরি করা একশ নৌকার ডামি। হারিয়ে যাওয়া অঞ্চলভিত্তিক একশ ধরণের নৌকা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর। অচিরেই এ জাদুঘরটি হবে নৌকা গবেষণাগার।

দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে- একটি বড় নৌকার আদলে নির্মিত মূল ভবনটি ৭৫ ফুট গলুই ও ২৫ ফুট করে নৌকার পেটের মধ্যে রয়েছে মূল জাদুঘর। বিভিন্ন নৌকার মডেলসহ খাল-নদী-সাগরে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন বিবেচনায় নৌকার প্রকরণ রয়েছে জাদুঘরে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিলাহ জানিয়েছেন, কালের বিবর্তনে নৌকা এখন খাল-নদী-সাগরে তেমন দেখা না গেলেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অবদান রেখেছে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে। যুক্তফ্রন্ট থেকে স্বাধীনতা এবং বর্তমান রাজনীতিতে প্রতীক হিসেবে নৌকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বরগুনা-বরিশালের অংশ হিসেবে হাজারো নদী-খাল এমনকি সাগরেও একসময় নৌকার আধিপত্য ছিলো।

তিনি বলেন, শুধু যানবাহনই নয়, মালামাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আনানেয়া, সুন্দরবন থেকে কাঠ সংগ্রহ, নদী-সাগরে মৎস্য শিকারসহ বহুল কাজে ব্যবহার হতো নৌকা। এখন পেশা হারিয়ে বেকার হয়েছে হাজার হাজার মাঝি-মাল্লা। এখন তাদের কেউ খোঁজও নেয় না। এমনকি নৌকা নিয়ে গবেষণা বা এর সংরক্ষণে এ যাবৎকাল কোথাও তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সেই শূন্যতা পূরণে বরগুনার নৌকা জাদুঘর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, নতুন প্রজন্মকে নৌকার ইতিহাস জানতে ও গবেষণা করতে সহায়তা করবে দেশের প্রথম স্থাপিত এ নৌকা জাদুঘরটি। বরগুনা জেলায় অবস্থিত ইকোট্যুরিজমকে আরও প্রসার ও সৌন্দর্যবর্ধন করতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে অম্লান রাখতে এমন ভিন্নধর্মী উদ্যোগ হাতে নিয়েছিলাম, যা আজ সৃষ্টিরুপে দেখবে বরগুনা তথা দেশের মানুষ।