করোনার নয় মাসে মৃত্যু ৭৭১৮

এইমাত্র স্বাস্থ্য

আহমেদ হৃদয় : করোনাভাইরাস নামক মরণব্যাধি রোগটির প্রথম উৎপত্তি হয় চীনের উহান শহরে। চীন থেকে প্রথম উৎপত্তি হওয়ার পর বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কথা প্রথম জানা যায় ২০২০ সালের ৮ই মার্চ। করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে প্রথম মৃত্যুটি ঘটে গত বছরের ১৮ই মার্চ। বাংলাদেশে গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মহামারী পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছিল। জুন মাসে সংক্রমণটি তীব্র আকার ধারণ করেছিল। প্রতিদিন বেড়েই চলছিল মানুষের মৃত্যু। গত বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে কঠোর লকডাউন এর ঘোষণা করা হলেও মৃত্যু কোনোভাবেই কমছিল না। করোনাভাইরাসের ছোবলে মৃত্যুর চাকা সচল ছিল। এদিকে আগস্ট মাস থেকে নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে দেখা গিয়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়েও জনগণের মধ্যে শৈথিল্য দেখা গিয়েছিল। ২৮ সেপ্টেম্বর করোনাভাইরাস সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত এই ভাইরাসে সারা বিশে^ আক্রান্তের সংখ্যা ৮ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৭ জন। যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ লাখ ৮৪ হাজার ২৬৬ জনের। গতকাল প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হলো ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯০৫ জন। যার মধ্যে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ হাজার ৭১৮ জন। এদিকে নতুন বছরের প্রথম দিন ৯৯০ জন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২ জানুয়ারি তা নেমে আসে ৬৮৪ জনে। এর পরের চার দিন তা ৮০০ থেকে ৯০০ এর ঘরে ওঠানামা করতে দেখা যায়। এই ৬দিনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যাও ৩০ এর নিচে ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত এক হাজার ৭ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯০৫ জন হয়েছে। আর গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৭১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত সুস্থ হওয়া রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৬ জন হয়েছে।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৮১০টি নমুনা।
বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
গত বছর ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ১০ মে পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজারের নিচে ছিল। এরপর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুন-জুলাইয়ে পৌঁছায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমে এলেও নভেম্বর মাসে তা বাড়তে থাকে। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তা আবার কমে অক্টোবরের পর্যায়ে চলে আসে। এদিকে বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ কোটি ৭২ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮ লাখ ৮৪ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৬তম অবস্থানে।
করোনা শব্দের অর্থ জ্যোতির্বলয়। প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আবিষ্কার করা হয়েছিল ১৯৬০ সালে। তবে কীভাবে এই ভাইরাসের উৎপত্তি, তা জানা সম্ভব হয়নি। সূর্য থেকে ছিটকে পড়া আলোকরশ্মির মতো হওয়ায় ভাইরাসটির নামকরণ হয়েছে করোনাভাইরাস। মানুষ ও পশুপাখি কখনো কখনো এই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। অন্যান্য ভাইরাসের মতো এটিও হাঁচি-কাশি ও কফের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে।


বিজ্ঞাপন