সুমন হোসেন, যশোর : বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে যশোরের গদখালিতে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফুলের বিকিকিনি অনেক কম বলে জানিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। করোনা সংক্রামনের কারনে এমনটি হয়েছে দাবী স্থানীয় ফুল চাষীদের।
সারা বিশ্বে ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবসে প্রতিটি মানুষ তার আপনজনকে কাঁচাফুলের শুভেচ্ছা জানাই। এই ধরনের বিশেষ দিবস সহ সারা বছর যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ফুল পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হয়। দেশের ফুলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে এই ফুল বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয় করে। ফলে অনেক বেকার মানুষ এই ফুল চাষে সফল হয়ে বেকারত্ব ঘুচিয়ে নিজের পায়ে দাড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, ঝিকরগাছা, শার্শা ও মনিরামপুর উপজেলার আনুমানিক ৫ থেকে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ করা হয়েছে। এই বিভিন্ন প্রজাতীর ফুল গদখালিতে পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করা হয়। প্রতি দিন ভোর রাত থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত নিয়মিত চলে ফুল বিকিকিনি। ১ মাসে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার ফুল বিক্রি হয়। ১ বছরে ২/৩ হাজার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়।
ভালবাসা দিবস উপলক্ষে প্রতিটি গোলাম ফুল ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা দরে, ১০০টি রজনীগন্ধা ফুল ১২০০ টাকা দরে, গেন্ধা ফুল ১০০০টি ৫০০ টাকা দরে এবং গেলোডিলাস ফুল প্রতিটি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা এবং কাঁচা ফুলের তোড়া ১টি ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গদখালি বাজারে ৭ থেকে ৮ টি ফুলের পাইকারী ও খুচরা দোকান রয়েছে। তবে ভালবাসা দিবসে গদখালিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মানুষের ঢল নামে। একে অপরের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
গদখালি বাজারের মায়ের দোয়া ফুল ঘরের মালিক মোঃ সেলিম রেজা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফুল বেচাকেনা তেমন নেই। ফুলের দাম একটু বেশি থাকায় খুব কম বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের মধ্যে ফুলের চাহিদা আগের মত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অনেকেই এসে ফুলের দাম শুনে চলে যাচ্ছে।
ঐ এলাকার প্রথম ফুল চাষী শের আলী সরদার জানান, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আমি ১৯৮২ সালে ভারত থেকে দেখে এসে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু করি। প্রথম বছরে গদখালির পানিসরা ইউনিয়ন এলাকায় ৩০ শতক জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করি। সব ধরনের খরচ বাদ দিয়ে ঐ বছর ২ লক্ষ টাকা লাভ হয়। এই দেখে অনেকেই ফুলের চাষে আগ্রহ দেখিয়ে শুরু করে। তারপর থেকে ফুলের চাষ বৃদ্ধি পেয়ে এই স্থানে এসে দাড়িয়েছে।