নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুপুরে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির জন্য জমায়েত শুরুর আগেই পুলিশ লাঠিপেটা করে ও কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
জানা গেছে, অনুমতি ছাড়াই প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শুরু করে ছাত্রদল। সকাল ১০টার দিক থেকে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তারা রাস্তায় নামলে বাধা দেয় পুলিশ।
এই ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক এবং ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুন খানসহ প্রায় ৩৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল ছুড়াছুড়িতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের জায়গা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মানুষ দিগ্বদিক ছুটতে শুরু করে।
রোববার সোয়া ১১টা দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হতে থাকে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসেছিলেন।
সকাল ১১টায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল জাতীয় প্রেসক্লাবের চত্বরে এসে পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। পুলিশ তাকে অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করা যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ নেতারাও ছিলেন সেখানে।
পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পরপরই সোহেল জাতীয় প্রেসক্লাবের মূল গেইট দিয়ে বাইরে এসে ফুটপাতে নেতা-কর্মী নিয়ে সমবেত হন। তখন পুলিশ অ্যাকশনে যায়; শুরু হয় লাঠিপেটা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাব চত্বরে আশ্রয় নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। সেখান থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে কেউ কেউ। পরে পুলিশের একটি দল প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকেও লাঠিপেটা করে এবং কয়েক রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে।
এই ঘটনার পরপর দ্বিতীয় দফায় আবারো ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে চেষ্টা করলেও পুলিশ আবারও লাঠিপেটা করে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পুলিশের মারমুখী অবস্থানের মধ্যেও ‘মুশতাক হত্যার বিচার চাই’, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমাদের সাথে’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হন।
ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ সামনে রেখে সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, জলকামানের গাড়ি, আর্মার্ড কার, প্রিজন ভ্যান মোতায়েন করা হয়।
পেশাগত দায়িত্ব পালনে থাকা এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাপারসন মামুনসহ কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় প্রেসক্লাবের ৫/৬ জন কর্মচারী আহত হন।