নিজস্ব প্রতিবেদক : দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লিঃ (কালব) এর চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী বিনা প্রয়োজনে জমি ক্রয়, ভবন নির্মান, গাড়ি ক্রয়, প্রধান কার্যালয় বিক্রি করে আবার নতুন ভবন নির্মানের জন্যে জমি ক্রয়, রিসোর্ট ও মদের বার করার নামে প্রায় ১০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে জানা গেছে। কালব লুটপাট করে কানাডার টরেন্টোতে বাড়ি কিনেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে। তার দুই মেয়ে টরেন্টোতে বসবাস করে। জোনাস ঢাকী ১০ বছরের ফ্রি ভিসায় কানাডায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। নাগরিকত্ব কনফার্ম হলে কালবের তহবিল শূণ্য করে দিয়ে কানাডায় পালাবেন। তার পূর্বের চেয়ারম্যান সাইমন এ পেরেরা ১০০ কোটি টাকা লোপাট করে নাগরিক হওয়ার সুবাদে আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদক ইতিমধ্যে মামলা করেছে। অর্থের বিনিময়ে কালবে জব্দ সাইমনের পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে আমেরিকায় পালাতে সহায়তা করেছে জোনাস ঢাকী। এক্ষেত্রে সমবায় অধিদপ্তরের ভ’মিকা রহস্যজনক। জোনাস ঢাকীর বেপরোয়া লুটপাটের কারনে কালব ধ্বংসের প্রহর গুনছেন সদস্যগণ।
এদিকে জোনাস ঢাকীর লুটপাটে অতিষ্ট অসহায় বোর্ডের অন্য সদস্যগণ। বর্তমান বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারী বাধ্য হয়ে জোনাস ঢাকীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে সদস্য সমিতির প্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বিগত ২৮-১২-২০১৯ খ্রীঃ তারিখে দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ (কালব) নির্বাচনে জোনাস ঢাকী পুনরায় জয়লাভ করে ০১-০১-২০২০ খ্রীঃ তারিখে দায়িত্ব গ্রহণের পরে কার্যক্রম পরিচালনায় প্রাক্তন সেক্রেটারি এমদাদ হোসেন মালেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মি. জোনাস ঢাকী বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচার ও ষড়যন্ত্রের কারণে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় নানা প্রকার বাঁধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে এবং কাল্ব ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
জানাগেছে, ২৮-১২-২০১৯ তারিখে নির্বাচনের পূর্বে চেয়ারম্যান মি. জোনাল ঢাকী ও প্রাক্তন সেক্রেটারি এমদাদ হোসেন মালেক ক্যাশ থেকে বোর্ডের অনুমোদন না নিয়েই ৩২,৮০,৩৭৬/- টাকা অগ্রীম নিয়েছেন। কোন অগ্রীম ভাউচারেও স্বাক্ষর করেননি।
নির্বাচনের পরের দিন ২৯-১২-২০১৯ তারিখে উক্ত ৩২,৮০,৩৭৬/- টাকা সফ্টওয়্যারে স্টাফদের বোনাস দেয়ার কথা বলে একটি ভূয়া ভাউচার পোস্টিং দিয়ে উক্ত ক্যাশ এডজাস্ট করে দিয়েছেন।
স্টাফদের বোনাস দেয়ার নাম করে তারা দুইজনে ৩২,৮০,৩৭৬/- টাকা আত্মসাৎ করে স্টাফদের সাথে চরম প্রতারণা করেছে।
অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি উক্ত ৩২,৮০,৩৭৬/- টাকার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন, প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতি বোর্ড সভায় উক্ত বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আলোচ্যসূচী থাকলেও সময়ের অজুহাত দিয়ে উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য সময় পার করা হচ্ছে।
করোনাকালীন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রতিবেদন ছাপানোর জন্য কাল্ব-এর বর্তমান কোন কর্মকর্তার বক্তব্য না থাকা সত্বেও চেয়ারম্যানের একক অনুমোদন বিল প্রদান করা হয়েছে।
২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের অডিট রিপোর্টে ঢাকী-মালেক তাদের বিরুদ্ধে অনেক দায় আসার কথা ছিল, কিন্তু চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী বোর্ডের সাথে কোন আলোচনা না করেই অনৈতিক লেনদেন করে তাদের বিরুদ্ধে কোন দায় না আসার বিষয়ে অডিটরকে প্রভাবিত করে।২০১৮-১৯ অথর্ বছরের অডিট রিপোর্ট পযালোচনা করে তার প্রমানও পাওয়া গেছে।
এছাড়া, বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ডিএম-দের ট্রান্সফার করা হবে, এইচআর বিভাগ থেকে ট্রান্সফার প্রস্তাব প্রস্তুত করে এইচআর বিভাগ, জিএম এবং সেক্রেটারির স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যানের অনুমোদনের জন্য দেয়া হলে চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী এইচআর বিভাগকে দিয়ে উক্ত প্রস্তাবে সেক্রেটারির স্বাক্ষর বাতিল করে তার একক স্বাক্ষর করেন। উপ-আইন অনুযায়ী নথিপত্রে সেক্রেটারির স্বাক্ষর আবশ্যিক থাকলেও সেক্রেটারির স্বাক্ষর বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান একাই স্বাক্ষর করেন।
অন্যদিকে ২৮-১২-২০১৯ তারিখে নির্বাচনের পরে ০১-০১-২০২০ তারিখে বিগত বোর্ড বর্তমান বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের অডিট সম্পন্ন হয়েছে ৩০-০৯-২০২০ তারিখে। একাউন্টসে চেয়াম্যান জোনাস ঢাকী, ট্রেজারার এম জয়নাল আবেদিন স্বাক্ষর করেছে, সাথে অবৈধভাবে প্রাক্তন সেক্রেটারি এমদাদ হোসেন মালেক- এর স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। ০১-০১-২০২০ তারিখের পরে প্রাক্তন সেক্রেটারির স্বাক্ষর করার কোন অধিকার না থাকা সত্বেও বর্তমান সেক্রেটারির স্বাক্ষর না নিয়ে প্রাক্তন সেক্রেটারির স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী ও ট্রেজারার এম জয়নাল আবেদিন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচার ও অবৈধ কাজ করেছে ।
নির্বাচনের পূর্বে জোনাস ঢাকী ও এমদাদ হোসেন মালেক- এর বিরুদ্ধে নিবন্ধক বরাবর বর্তমান সেক্রেটারি আলফ্রেড রায় অভিযোগ করেছিল, এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছৈ এবং তদন্ত রিপোর্টে জোনাস ঢাকীর বিরুদ্ধে অনেক আর্থিক দায় নির্ধারণ হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করার জন্য ৪৯ ধারায় তদন্ত করার সুপারিশ করেছে। সুপারিশ অনুযায়ী নিবন্ধন মহোদয় ৪৯ ধারায় ১০ বছরের তদন্ত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে- তদন্ত কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী ৪৯ ধারায় তদন্ত বাতিল করার জন্য হাইকোর্টে রিট করেছেন। তিনি যদি নির্দোষ হন তাহলে কেন তিনি তদন্ত বাতিল করার জন্য রিট করলেন । রিট করে তিনি যে দোষি তা তিনি নিজেই প্রমাণ করলেন বলে সংশ্লিষ্টগণ মহল মনে করেন।
বোর্ড সভায় এসকল বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করা হলেও কোন সফল হয়নি বরং মারমুখি আচরণ করা হয়। নানারকম ষড়যন্ত্র করা হয়।
এমতাবস্থায় সমবায়ীদের স্বার্থ রক্ষ্ার্থে কালবের চুড়ান্ত ধ্বংসের পূর্বে দুর্নীতিবাজ সাইমন এ. পেরেরার মত চেয়ারম্যান পদ থেকে জোনাস ঢাকী’র অপসারন দাবি করেছেন কালবের সচেতন ডেলিগেটগণ।